সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যাননি। অথচ গত এক সপ্তাহে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান ২৪ জন। গড়ে প্রতিদিন প্রায় চারজন করে মারা গেছেন। একই সময়ে গড়ে প্রতিদিন শতাধিক করোনা শনাক্ত হয়েছে।
Advertisement
তবে গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৪১ জনের দেহে। যার মধ্যে ২০ জনই সিলেট জেলার বাসিন্দা। একই সময়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৭৭ জন। কম আক্রান্ত, মৃত্যুহীন এমন দিন গত এপ্রিল মাসে কমই কেটেছে সিলেটবাসীর। শুধু এপ্রিল মাসেই এ বিভাগে করোনায় সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন ৫৪ জন নারী-পুরুষ।
শনিবার (১ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়া স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনন পর্যালোচনা করে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গেল ২৪ ঘণ্টায় সিলেটের চারটি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় ৪১ জন করোনা আক্রান্ত সনাক্ত হন। এর মধ্যে সিলেট জেলার ২০ জন, সুনামগঞ্জের ৯ জন, হবিগঞ্জে ৯ জন, মৌলভীবাজারে ৩ জন।
Advertisement
নতুন এই ৪১ জনসহ সিলেট বিভাগে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৬৯২ জনে। তবে সিলেট বিভাগে করোনা সংক্রমিত সক্রিয় রোগী আছেন ১ হাজার ১০৫ জন। বাকি ১৯ হাজার ২৩৭ জন জন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। আর মারা গেছেন ৩৫০ জন।
মোট করোনায় সংক্রমিতদের মধ্যে শুধুমাত্র সিলেট জেলায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৩ হাজার ২৭০ জন। এছাড়া সুনামগঞ্জে ২ হাজার ৭৩৪ জন, হবিগঞ্জে ২ হাজার ৩৬৯ জন ও মৌলভীবাজারে ২ হাজার ৩১৯ জনের করোনায় আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৭৭ জন। এরমধ্যে সিলেটের ৬৪ জন ও মৌলভীবাজারের আরও ১৩ জন রয়েছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হলেন ১৯ হাজার ২৩৭ জন। এর মধ্যে সিলেট জেলার ১২ হাজার ৬১৬ জন। এছাড়া এখন পর্যন্ত সুনামগঞ্জে ২ হাজার ৬২৭ জন, হবিগঞ্জে ১ হাজার ৮০৮ জন ও মৌলভীবাজারে ২ হাজার ১৮৬ জন সুস্থ হয়েছেন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট জেলায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন চার জন করোনা আক্রান্ত রোগী। সবিমিলিয়ে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৩৪ জন। এরমধ্যে সিলেট জেলায় ২১৪ জন, সুনামগঞ্জে ৪ জন, হবিগঞ্জে ১০ জন, মৌলভীবাজারে ৬ জন। সিলেট বিভাগে এ পর্যন্ত সিলেট বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৩৫০ জন। এর মধ্যে সিলেট জেলার ২৭৭ জন, সুনামগঞ্জে ২৭ জন, হবিগঞ্জে ১৮ জন ও মৌলভীবাজারের ২৮ জন রয়েছেন।
Advertisement
গত বছরের ৫ এপ্রিল সিলেটে প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এর ১০ দিন পর করোনায় আক্রান্ত সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গত বছরের এপ্রিল ও মে মাসে জেলায় মারা যান ১৩ জন। এরপর থেকে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকে।
গত বছরের জুনে ৪৫, জুলাইয়ে ৪৭ জন মারা যান। এরপর মৃতের সংখ্যা কমতে থাকে। আগস্টে ২৭, সেপ্টেম্বরে ২২, অক্টোবরে ১১, নভেম্বরে ১২ ও ডিসেম্বরে ১৮ জন মারা যান। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এ সংখ্যা আরও কমে। জানুয়ারিতে ১২, ফেব্রুয়ারিতে ৩ ও মার্চে মৃতের সংখ্যা ছিল মাত্র ৫ জন। আর হঠাৎ করে এপ্রিল মাসে করোনায় সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়ে এবং গত এক বছরের মধ্যে এপ্রিল মাসে রেকর্ড সংখ্যক ৫৪ জনের মৃত্যু হয়। তবে নতুন এই মে মাস শুরু হয়েছে মৃত্যুহীন।
ছামির মাহমুদ/এসজে/এমকেএইচ