দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টির দেখা নেই দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে। তীব্র দাবদাহে জলাশয়গুলো শুকিয়ে গেছে। এদিকে উপকূলে চলছে রবি শস্যের মৌসুম। পানির অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসল। ফলে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
Advertisement
পূর্ব হেতালিয়া এলাকার কৃষক শাহ আলম বলেন, এবার এক কানি জমিতে মুগডাল চাষ করেছি। রোদের তাপে গাছ পুড়ে গেছে। সঙ্গে পোকার আক্রমণ তো আছেই। সবসময় চৈত্র-বৈশাখ মাসে বৃষ্টি থাকে। কিন্তু এবার বৃষ্টির কোনো দেখা নেই। এবার ধারণা করছি, তিন মণের মতো ডাল ঘরে তুলতে পারবো। যেখানে গতবার সাত-আট মণ ডাল ঘরে তুলেছিলাম।
কৃষক মো. মঈন বলেন, এবার মরিচে লাভবান হবো ভেবেছিলাম। কিন্তু দেশে যে খরা চলছে, তাতে এবার ক্ষতি ছাড়া কোনো উপায় নাই। অতিরিক্ত তাপে মরিচ গাছও শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। পাশের খাল শুকিয়ে সেচ দেয়ার কোনো অবস্থা নাই। এভাবে খরা চলতে থাকলে এবার ভাতে মরবো নিশ্চিত।
বোরা চাষী আলী মিয়া বলেন, বৃষ্টি না হওয়াতে খালের পানি শুকিয়ে গেছে। ধানে সেচের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তেমন পানি দিতে পারিনি। অতিরিক্ত রোদে ধান পুড়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে।
Advertisement
কৃষি অফিস জানায়, পটুয়াখালীতে আবাদ হয়েছে মুগডাল ৯৭ হাজার ১৩২ হেক্টর জমিতে, বোরো ৯ হাজার ৭৪৩ হেক্টর জমিতে, চীনাবাদাম তিন হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে ও মরিচ চার হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে। এছাড়া মাঠে রয়েছে সবজি, ভুট্টাসহ বিভিন্ন প্রকারের ফসল।
পটুয়াখালী কৃষি সম্পসারণ কর্মকর্তা এ কে এম মহিউদ্দিন বলেন, দাবদাহ চলছে। বৃষ্টির অভাবে ফসলের কিছু ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যে এলাকায় খাল শুকিয়ে গেছে সেসব অঞ্চলের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবার আবার খাল ও নদীর পানি লবণাক্ত হয়ে গেছে। তাই কৃষকরা এ পানি সেচে ব্যবহার করতে পারছেন না।
পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, গত সপ্তাহে পটুয়াখালীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত দশ বছরে এমন তাপমাত্রা ওঠেনি এখানে।
Advertisement
গত নভেম্বর থেকে এ জেলায় এখন পর্যন্ত বৃষ্টি হয়নি বলে জানান তিনি।
এসএমএম/এমএস