পাইকারি বাজারে কমেছে তরমুজের দাম। তবে খুচরা বাজারে এর প্রভাব নেই। ক্রেতাদের আগের মতোই বেশি দামে কেজি হিসেবে খুচরা বাজার থেকে গরম ও রমজানের কাঙ্ক্ষিত এই ফলটি কিনতে হচ্ছে।
Advertisement
শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) যাত্রাবাড়ী আড়তে তরমুজের পাইকারি বাজার ও আশপাশে খুচরা বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। পাইকারি বাজারে সাধারণ তরমুজ শ’ (১০০টি) হিসেবে বিক্রি হয়।
আড়তের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তরমুজের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় প্রতি একশ তরমুজে ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। কেউ বলছেন, মাঝারি সাইজের একটা তরমুজে কমপক্ষে ৫০ টাকা দাম কমেছে।
কিন্তু খুচরা বাজারে ক্রেতাকে এখনও ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে ফলটি কিনতে হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা শ’ হিসেবে কিনে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করায় ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা এবং গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে দেশের কোনো কোনো জায়গায় খুচরা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু রাজধানীর বাজারের চিত্রের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
Advertisement
আড়তদারদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ৭ থেকে ১২ কেজি ওজনের প্রতি একশ তরমুজ এক সপ্তাহ আগেও ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি হতো। এখন সেটা বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকায়। ৫ থেকে ৭ কেজি ওজনের মধ্যে থাকা একশ তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। কয়েকদিন আগেও এই দাম ছিল ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা।
যাত্রাবাড়ী আড়তের মক্কা-মদিনা এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘তরমুজের সরবরাহ বেশি তাই দাম অনেকটাই কমে গেছে। এখন মূলত খুলনার তরমুজ আসছে। আরও মাস খানেক তরমুজ থাকবে।’
কুমিল্লা বাণিজ্যালয়ের মো. রফিক বলেন, ‘যে তরমুজ ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করছি এখন তা ২০ হাজার টাকার মতো। দাম কমায় অনেক ব্যাপারি ক্ষতি মুখে পড়েছেন।’
হাজী নাছির বাণিজ্যালয়ের মালিক হাজী নাছির উদ্দিন বলেন, ‘তরমুজপ্রতি দাম কমপক্ষে ৫০ টাকা কমেছে। এতে মানুষ কম দামে তরমুজ খেতে পারবে।’
Advertisement
এবার তরমুজ চাষীরা ভাল দাম পেয়েছেন জানিয়ে হাজী নাছির বলেন, ‘গত ২০ বছরে চাষীরা তরমুজে এত ভাল দাম পেয়েছে বলে আমি শুনিনি।’
ছোট আকৃতির গাঢ় সবুজ রংয়ের তরমুজ বা খরমুজ আসছে বেশি। খরমুজের দামও আগের চেয়ে কমে গেছে। আড়তে তরমুজ শ’ হিসেবে বিক্রি হলেও খরমুজ কেজি দরেই বিক্রি হয়।
খরমুজ বিক্রেতা ফজলুল হক বলেন, চাহিদা কম ও সরবরাহ বেশি থাকায় খরমুজের দাম কমে গেছে। আগে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন আমরা বিক্রি করছি ৩০ টাকা কেজি দরে।
খরমুজ চুয়াডাঙ্গা থেকে আসছে বলেও জানান ফজলুল হক।
তবে রাজধানীর শনির আখড়া, রায়েরবাগ, মাতুয়াইল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে আগের মতোই ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে।
রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডের খুচরা তরমুজ বিক্রেতা শরিফুল বলেন, ‘৬০ টাকা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করছি। সবাই যে দামে বেচে আমিও সেই দামেই বেছি।’
আরএমএম/এমএইচআর/জেআইএম