কৃষি ও প্রকৃতি

ফরিদপুরে পরীক্ষামূলক আপেল চাষে ৩ চাষির সাফল্য

ফরিদপুরের সালথায় পরীক্ষামূলকভাবে আপেল চাষ করা হয়েছে। আর প্রথমেই আপেল চাষে সাফল্য পেয়েছেন ৩ জন সৌখিন চাষি। সালথা উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগীতায় ৬টি সামার গ্রিন জাতের আপেলের চাষ পরীক্ষামূলক শুরু করেন এ ৩ জন ফল চাষি। এর মধ্যে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের দরগা গট্টি গ্রামের গোপাল বিশ্বাস ৩টি, মিয়ার গট্টি এলাকার আরিফ হোসেন ২টি এবং অপর একটি গাছ ফরিদপুর সদর এলাকায় রোপণ করা হয়।

Advertisement

এই ৬টি গাছের মধ্যে গোপাল বিশ্বাসের রোপণ করা ৩টি গাছেই চলতি মৌসুমে ফুল এবং ২ টি গাছে আপেলের গুটি এসেছে। আরেক চাষি আরিফ হোসেনের রোপণ করা একটি গাছে বেশ ভালো ফুল থাকলেও ফলের গুটি ঝরে পড়ে যায়।

সবমিলিয়ে আপেল চাষের জন্য ফরিদপুরের অত্র এলাকার আবহাওয়া বেশ অনুকূলে রয়েছে বলে স্থানীয় কৃষি অফিসসূত্র জানায়। পরীক্ষামূলক এই আপেল চাষে সাফল্য পাওয়ায় সৌখিন অনেক ফল চাষিরা আগামীতে আপেল চাষের কথা ভাবছেন। সেই অনুসারে অনেকেই আপেল চাষের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।

চাষি, গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতায় ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ৩টি আপেল গাছের চারা রোপণ করি। নিবিড়ভাবে পরিচর্চা করার পর চলতি মৌসুমে ৩টি গাছের মধ্যে দু'টি গাছে ফল দেখতে পাই। আপেল বিদেশি ফল হওয়ায় অনেক লোক দেখতে আসছে। আমি আশা করছি আগামী বছর তিনটি গাছেই ফল থাকবে। তিনি বাণিজ্যিকভাবে আপেল চাষ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান।

Advertisement

আরেক ফল চাষি আরিফ হোসেন বলেন, আমি বিভিন্ন ধরনের ফলের আবাদ করছি পাশাপাশি পরীক্ষামূলকভাবে আপেল গাছ রোপণ করেছি। চলতি মৌসুমে আপেল গাছে অনেক ফুল থাকলেও সব ঝরে গেছে। তবে নতুন অবস্থায় এটা অনেক আশা জাগায়, আমি আশা করছি আগামী মৌসুমে ফল থাকবে। ফলন ভালো হলে অন্য ফলের পাশাপশি আপেল চাষ করবো।

এ বিষয়ে সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জীবাংশু দাস বলেন, গত বছর এপ্রিলের দিকে ৬ টি আপেল চারা (সামার গ্রিন) এনেছিলাম দিনাজপুর থেকে, পরীক্ষামূলক চাষের জন্য। উদ্দেশ্য ছিল সালথা উপজেলার কৃষিকে আরেকটু সমৃদ্ধ করা, নতুন একটি প্রযুক্তি যুক্ত করা। ঝুঁকি ছিল, কারণ নতুন ফসল মাটি ও আবহাওয়ার সাথে কতটা খাপ খায় সেটা নিয়ে একটু চিন্তিত ছিলাম। তাছাড়া দামটাও একটু বেশি। সেই চেষ্টা এখন পর্যন্ত সফল। প্রথম বছরেই ২টি গাছে একটি করে ফল এসেছে, বাকিগুলোতেও ফুল আছে।

তিনি আরও জানান, ধীরে ধীরে আমাদের কৃষক এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আপেল চাষের ইচ্ছা আছে। সেটা করা গেলে পুষ্টিসমৃদ্ধ এ ফল বাইরে থেকে আমদানী করতে হবে না। ধন্যবাদ জানাই সৌখিন চাষিদেরকে যারা ঝুঁকি নিয়ে এ ফলটি চাষ করেছেন। উপজেলার ফল চাষীদের জন্য এটা অনেক বড় সাফল্য বলেও তিনি জানান।

এমএমএফ/জিকেএস

Advertisement