রাজধানীতে ফলের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার বাদামতলী। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের আনাগোনা এই বাজারে। সারাক্ষণ মানুষের ঢল নামা বাজারটিতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নিয়ে কোনো সচেতনতাই নেই। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা, বেশিরভাগ ক্রেতা-বিক্রেতা মাস্কই ব্যবহার করেন না।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বাদামতলীর বিভিন্ন ফলের আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, সারাক্ষণ প্রতিটি আড়তেই ক্রেতা-বিক্রেতার জটলা লেগে থাকছে। অন্যের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি না করে কারোর পক্ষেই চলাচল করা যাচ্ছে না। অপরদিকে এসব আড়তের বেশিরভাগ ক্রেতা-বিক্রেতা কোনো ধরনের মাস্ক ব্যবহার করছেন না। আবার যারা মাস্ক ব্যবহার করছেন তাদের বেশিরভাগই তা ঝুলিয়ে রাখছেন থুতনিতে।
মাস্ক পরার প্রয়োজনও বোধ করেন না বাদামতলী বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারা
বরগুনা থেকে তরমুজবোঝাই ট্রাক নিয়ে আসা আলম নামের একজন বলেন, ‘এখানে সব সময় মানুষের এমন ভিড় হয়। ঢাকার পাশাপাশি নরসিংদী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরাও এখানে ফল কিনতে আসেন। ব্যবসায়ীদের বাইরে হাজার হাজার মানুষের রুটি-রুজি নির্ভর করে বাদামতলীর ওপর।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘গত বছর করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের মধ্যে অনেক আতঙ্ক ছিল। এবার তা নেই। মানুষ করোনাকে এখন পাত্তাই দেয় না। আর বাদামতলীতে যারা আসেন, তারা খেটে খাওয়া মানুষ। এসব খেটে খাওয়া মানুষের কাছে করোনা কিছুই না! এ কারণেই হয়তো এখানকার বেশিরভাগ মানুষ মাস্ক পরে না।’
ট্রাক থেকে তরমুজ নামানোর কাজ করা মিলন বলেন, ‘আমরা আজ নতুন না। বছরের পর বছর ধরে এখানে কাজ করছি। মাস্ক পরে কাজ করতে গেলে এক মিনিটে মাস্ক ভিজে যাবে। তাই আমরা মাস্ক পরি না। মাস্ক না পরার কারণে আল্লাহর রহমতে এখনো কোনো সমস্যা হয়নি।’
বাদামতলী বাজারে বেশিরভাগই মাস্ক পরেন না, যারাওবা পরেন, তা পড়ে থাকে থুতনিতে
উত্তরা থেকে তরমুজ কিনতে আসা ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘বাদামতলীর পরিবেশ আমাদের সয়ে গেছে। প্রতিনিয়ত এখানে মানুষ ও গাড়ির জটলা হয়। হুড়োহুড়ি, পাড়াপাড়ি না করে এখানে চলাচল করা যায় না। এখানে যে পরিবেশ মাস্ক পরে কোনো কাজ হবে না। তাছাড়া মাস্ক পরে মালের দরদাম করা যায় না। এ কারণে বেশিরভাগ মানুষ মাস্ক পরে না।’
Advertisement
ঝিনাইদহ সিন্ডিকেট আড়তের এক কর্মী আলম বলেন, ‘এখানে হাজার হাজার মানুষ, কাকে মাস্ক পরতে বলবেন? তাছাড়া কার কথা কে শোনে! তাই আমরাও সবকিছু আল্লাহর কাছে ছেড়ে দিয়েছি, যা হওয়ার তা হবেই।’
এমএএস/এমএসএইচ/এইচএ/জিকেএস