ইন্দোনেশিয়ায় গত সপ্তাহে নিখোঁজ নৌবাহিনীর সাবমেরিনে থাকা ৫৩ জন নাবিকের সবাই মারা গেছেন। রোববার সাবমেরিন কেআরআই নাঙ্গালার ধ্বংসাবশেষ সমুদ্রের তলদেশে পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা।
Advertisement
এদিকে ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনী একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যাতে দেখা যাচ্ছে, ডুবে যাওয়া সাবমেরিনের নাবিকরা দেশটির একটি জনপ্রিয় গান গাইছেন। কয়েক সপ্তাহ আগে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, নাবিকেরা ‘সাম্পাই জুমপা’ নামে ইন্দোনেশিয়ার একটি জনপ্রিয় গান গাইছেন, যার মানে, ‘আবার দেখা হবে’।
বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিখোঁজ হওয়ার আগে এক টর্পেডো মহড়ায় অংশ নিয়েছিল সাবমেরিনটি। তবে এর ডুবে যাওয়ার কারণ এখনও জানা যায়নি।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নাবিকরা গিটার বাজিয়ে গান গাইছেন। তাদের সঙ্গে সাবমেরিনের কমান্ডার হ্যারি অকটাভিয়ানও রয়েছেন। তাদের গানের কথাগুলো এরকম, ‘যদিও এক্ষুণি তোমাকে বিদায় জানাতে প্রস্তুত নই আমি, কিন্তু তোমাকে ছাড়া বেঁচেও থাকতে পারবো না। তোমার মঙ্গল হোক।’
Advertisement
ইন্দোনেশিয়ার সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ডিজাওয়ারা হুইমবো বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, গানটি নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তার বিদায়ী সংবর্ধনার জন্য গাওয়া হচ্ছিল। এ সময় সেটা রেকর্ড করা হয়।
সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে
এদিকে নৌবাহিনী বলছে, সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ এবং নাবিকদের মরদেহ উদ্ধারের পরিকল্পনা করেছে তারা। এসব ধ্বংসাবশেষ সাগরের ৮০০ মিটারেরও বেশি গভীরে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাগরের এত নিচ থেকে উদ্ধারকাজ চালাতে বিশেষায়িত যন্ত্রপাতি প্রয়োজন হবে।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) নিহত নাবিকদের স্বজনেরা বালির সমুদ্রতীরে এক শোকসভায় মিলিত হন। সেখানে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো সাবমেরিনের নাবিকদের দেশের ‘সেরা দেশপ্রেমিক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, নিহত নাবিকদের সন্তানদের পড়াশোনার খরচ সরকার বহন করবে।
Advertisement
জার্মানিতে তৈরি কেআরআই নাঙ্গালা সাবমেরিনটির বয়স ৪০ বছর। কিন্তু ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনী বলছে, ২০১২ সালে এটাকে সংস্কার করা হয়েছিল।
সাবমেরিন অনুসন্ধানে যুক্ত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ভারত। তখনো আশা করা হচ্ছিল সাবমেরিনটি হয়তো উদ্ধার করা সম্ভব এবং নাবিকদের বাঁচানো যাবে। কিন্তু রোববার কর্মকর্তারা জানান, সাবমেরিনটি থেকে তারা সিগনাল পেয়েছেন। এরপরই সাবমেরিনের অবস্থান ও ধ্বংসাবশেষ দেখে আসতে সিঙ্গাপুর থেকে আনা একটি উদ্ধারকারী ডুবোজাহাজ পাঠানো হয়।
এমএসএইচ/জেআইএম