করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিপর্যস্ত ভারত। দেশটিতে প্রতিদিন রেকর্ড সংখ্যক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে এবং মারা যাচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পড়েছে রাজধানী দিল্লি। করোনা রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ, হাসপাতালে শয্যার অভাবসহ সবমিলিয়ে বেসামাল হয়ে পড়েছে সেখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থা।
Advertisement
তবে অক্সিজেন উৎপাদন, সরবরাহ, আমদানি সবই স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এর পরও করোনা মোকাবিলায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ রাজ্যে বড় ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে আরও ৯৩টি অক্সিজেন প্লান্ট তৈরি করতে চেয়ে কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি প্লান্ট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। শিগগিরই আরও ৩টির কাজ শুরু হবে।
এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের ১১২টি কোভিড হাসপাতালে পাইপলাইনের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। নতুন যে হাসপাতালগুলোতে করোনা চিকিৎসার পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে, সেখানেও বেশিরভাগ পাইপলাইনেই সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে কয়েকটি হাসপাতালে সিলিন্ডারের মাধ্যমে তা সরবরাহ করা হবে বলে জানা গেছে।
Advertisement
ভারতজড়ে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কায় এই মুহূর্তে চিকিৎসার জন্য অক্সিজেনের সংকট তীব্র। সেই সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে জরুরি ভিত্তিতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদক্ষেপ নিলো।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে প্রতিদিন ৪৯৭ মেট্রিক টন অক্সিজেন উৎপাদিত হয়। এছাড়া ৩৮০ মেট্রিক টন বাইরে থেকে আসে। দিনে খরচ হয় ২২৩ মেট্রিক টন। ফলে বেশ খানিকটা উদ্বৃত্তই থেকে যায়। তাই ছোট ছোট স্তরে অর্থাৎ, হাসপাতাল-নার্সিংহোমে অক্সিজেনের কোনো অভাব নেই।
ভবিষ্যতেও যাতে অক্সিজেনের অভাব না হয়, সেজন্য আগাম প্রস্তুতি হিসেবে নতুন করে অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি কড়া নজরে রাখবে টাস্ক ফোর্স। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গে আরও ২০ হাজার করোনা শয্যা বাড়ানো হচ্ছে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এসএসকেএম, মেডিকা, আরএন টেগোর হাসপাতালে শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। রামকৃষ্ণ মিশন ও ভারত সেবাশ্রমের হাসপাতালগুলোকেও শয্যা বাড়ানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
Advertisement
সোমবার বারাকপুরের রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশনের পক্ষ থেকে করোনা চিকিৎসার জন্য রাজ্য তহবিলে ৫ লাখ টাকা দান করা হয়েছে। শুধু বেসরকারি উদ্যোগেই প্রায় ৭ হাজার করোনা শয্যা বাড়ছে। বেশ কয়েকটি সেফ হাউসও চালু হচ্ছে। গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, কিশোর ভারতী স্টেডিয়াম, মেট্রোপলিটান ক্লাব, উত্তীর্ণ সেফ হাউসের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে।
করোনাভাইরাসের আক্রান্তদের মৃত্যু হলে শেষকৃত্যের ধাপার মাঠ এবং নিমতলা শ্মশান ব্য়বহার করার পাশাপাশি পৌরসভার আবেদন, বাড়িতে কারও মৃত্যু হলে তা খবর পাঠাতে হবে। তবেই বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পৌরসভার পক্ষে শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করা হবে বলে কলকাতা পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে।
এমএসএইচ/এমএস