পুলিশকে জনগণের প্রথম ভরসাস্থল হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে গত বছরের ১৫ এপ্রিল পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) দায়িত্ব গ্রহণ করেন ড. বেনজীর আহমেদ। ৩৭তম আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর তিনি যেন হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশ পুলিশের ‘চেঞ্জ মেকার’।
Advertisement
বাহিনী প্রধানের আসনে বসেই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক পুলিশিং গড়ার লক্ষ্যে তিনি ঘোষণা করেন পাঁচ মূলনীতি। চালু করেন বিট পুলিশিং কার্যক্রম। কনস্টেবল থেকে অতিরিক্ত আইজিপি পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করেন। দীর্ঘদিনের দুর্নীতির কলঙ্ক থেকে পুলিশ বাহিনীকে মুক্তি দিতেও নেন নানা পদক্ষেপ। বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে আলোকিত-বিকশিত করার প্রয়াস নেন দেশপ্রেমের প্রোজ্জ্বল শিখায়। প্রযুক্তিনির্ভর, স্মার্ট ও আধুনিক পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে যুগোপযোগী পরিবর্তন আনেন পুলিশের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতেও।
১৯৬৩ সালের ১ অক্টোবর গোপালগঞ্জের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নেয়া বেনজীর আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। সপ্তম বিসিএসের মাধ্যমে ১৯৮৮ সালে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক হিসেবে সাড়ে পাঁচ বছরের বেশি সময় দায়িত্ব পালনের আগে তিনি প্রায় সাড়ে চার বছর ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে তিনি রেখেছেন মেধা আর দক্ষতার ছাপ।
রাজধানী ঢাকায় যখন জঙ্গিরা আস্তানা গাড়ছিল, রাজনৈতিক সন্ত্রাসে অনাগত ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন শঙ্কায় নগরবাসী, তখন তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি)। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সারাদেশ একরকম অচল হয়ে পড়লেও রাজধানী ঢাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সক্ষম হন বেনজীর আহমেদ। এরপর র্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্ব যখন পান, তখন বাহিনীর ভাবমূর্তি তলানিতে। সেখান থেকে র্যাবকে আস্থার বাহিনীতে পরিণত করতে কাজ করেন। আর গত বছর দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর ঠিক এক মাসের মাথায় আইজিপির দায়িত্ব পান তিনি।
Advertisement
দেশে যখন করোনা সংক্রমণের শুরু হয়, তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুলিশ সদস্যরা জনগণের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। ফলে অনেক সদস্যই নিজের অজান্তে করোনায় আক্রান্ত হন। আবার অনেকে মারাও যান। এ সময় সংক্রমণ থেকে নিজ বাহিনীর সদস্যদের সুরক্ষায় সাহসিকতার সঙ্গে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেন বেনজীর আহমেদ। দেন বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা। এছাড়া গত বছর করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে জনগণকে সেবা দিতে চালু করেন ‘প্যান্ডামিক পুলিশিং’। প্রণয়ন করেন একটি আন্তর্জাতিক মানের এসওপি এবং ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট প্রটোকল।
দেশে ভাইরাসটির প্রভাব শুরুর দুই সপ্তাহের মধ্যে নিজ উদ্যোগে ড. বেনজীর আহমেদ বাড়ান চিকিৎসাসেবার পরিধি। আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য অবিশ্বাস্য দ্রুততার সঙ্গে ভাড়া করেন বেসরকারি একটি হাসপাতাল। মাত্র ১২ দিনের মধ্যে সেখানে স্থাপন করেন পিসিআর ল্যাব ও কেন্দ্রীয় গবেষণাগার। উদ্দেশ্য কোভিড-১৯ সংক্রমণে পুলিশ বাহিনীর মৃত্যুহার শূন্যে ফিরিয়ে আনা। এ নিয়ে পরিকল্পনা করেন, নির্দেশনাও দেন। এতে পুরোমাত্রায় সফল হন আইজিপি। তার কর্মপরিকল্পনায় পুলিশে মৃত্যু ও আক্রান্তের হার কমতে থাকে।
এছাড়া, করোনা মহামারিতে মাঠপর্যায়ে বিপদগ্রস্ত, গরিব-অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবতার হাত বাড়িয়ে দেয় পুলিশ। দেশব্যাপী খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে। করোনায় আক্রান্তদের হাসপাতালে নেয়া, চিকিৎসা, ওষুধের ব্যবস্থা, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন-সৎকার করার মতো পুলিশ সদস্যরা মানবিক দায়িত্ব পালন করেন ড. বেনজীর আহমেদের নির্দেশনায়।
নিয়মিত কাজের পাশাপাশি এসব দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গত ২১ এপ্রিল পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান ৯১ জন পুলিশ সদস্য। করোনায় দেশের কোনো বাহিনীতে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যু।
Advertisement
বেনজীর আহমেদের ইচ্ছা, থানার বাইরে যেন জনগণের সঙ্গে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হয় পুলিশের। দুই লাখ পুলিশের সঙ্গে ১৮ কোটি মানুষের যোগাযোগকে জনবান্ধব করতে পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়ার পরিকল্পনাও আছে তার। চলমান করোনা দুর্যোগে জীবনবাজি রেখে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে প্রশংসা পাওয়া পুলিশের এই সুনাম ধরে রাখতে চান আগামী দিনেও।
করোনায় মৃত্যুহার শূন্যে নামাতে আইজিপির পদক্ষেপকরোনা সংক্রমণে পুলিশ বাহিনীর মৃত্যুহার শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন পুলিশ প্রধান ড. বেনজীর আহমেদ। এর মধ্যে রয়েছে—করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা সেবা দিতে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের আধুনিকায়ন এবং ২৫০ শয্যার সাধারণ হাসপাতাল থেকে ৭৫০ শয্যার কোভিড হাসপাতালে উন্নীতকরণ। পর্যায়ক্রমে এর শয্যা সংখ্যা এক হাজারে উন্নীত করা হয়। করোনায় বাহিনীর সদস্যদের সুরক্ষিত রেখে দায়িত্ব পালনের জন্য মাস্ক, পিপিই, স্যানিটাইজার সামগ্রী কেনার ব্যবস্থাও করেন আইজিপি।
মহামারিতে উজ্জ্বল পুলিশের ভাবমূর্তিমহামারিকালে দেশের বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানবতাবাদী ভাবমূর্তি অর্জন করেছে পুলিশ। যখন ছেলে তার মায়ের, স্বামী তার স্ত্রীর মরদেহ ছেড়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়েছে, তখন পুলিশই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মরদেহগুলো দাফন বা সৎকার করেছে। অভাবী মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দিয়েছে খাবার।
এই মহামারিকালে পুলিশের যে ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে, সেখান থেকে বাহিনীর সদস্যরা যেন সরে না আসেন, সেজন্য আহ্বান জানিয়ে একটি অনুষ্ঠানে বেনজীর আহমেদ বলেন, একদিন করোনা চলে যাবে। এরপর কী হবে, আমরা কি আবারও আমাদের আগের স্বরূপে আবির্ভূত হব? স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পুলিশ এত সম্মান, এত মর্যাদা আর কখনো পায়নি, করোনায় আমরা যা পেলাম। এখন জনগণ পুলিশের পক্ষে কথা বলছে, পুলিশের জন্য লিখছে। যারা কথায় কথায় পুলিশের সমালোচনা করতেন, তারাও পুলিশের পক্ষে হৃদয় উজাড় করে বলছেন, পুলিশকে সমর্থন করেছেন। যে সম্মান ও মর্যাদা আমরা পেয়েছি তা টাকা দিয়ে কেনা যায় না। মানুষের ভালোবাসা পেতে হলে মানুষের সঙ্গে থাকতে হয়, তাদের কাছে যেতে হয়, মানুষকে ভালোবাসতে হয়।
পুলিশকে দুর্নীতিমুক্ত হতে হবেবেনজীর আহমেদ পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। তার কথা, দুর্নীতিবাজরা পুলিশে থাকতে পারবে না। বড়লোক হতে চাইলে পুলিশের চাকরি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করুন। অবৈধ অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে বিলাসী জীবনযাপনের জন্য পুলিশের চাকরি নয়। মানুষ পুলিশকে তাদের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান দিয়েছে। যে মর্যাদা, যে সম্মান মানুষ পুলিশকে দিয়েছে, তা টাকা দিয়ে কেনা যায় না।
পুলিশে বদলি-তদবির চিরতরে বিদায়বেনজীর আহমেদ দায়িত্ব নিয়ে পুলিশে বদলি-তদবির কালচারকে চিরতরে বিদায় করার ঘোষণাও দিয়েছেন। গতানুগতিক ধারাকে পাল্টে বদলিতে নতুনত্ব এনেছেন। তার নির্দেশে পুলিশের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতা দূর করতে যুগোপযোগী পরিবর্তন আনা হয়। পুলিশের পদোন্নতি পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে গ্রহণের যুগান্তকারী সিদ্ধান্তও নেন তিনি।
বেনজীর আহমেদ প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের আধুনিকায়ন, যুগোপযোগী সিলেবাস প্রণয়ন, মডিউল তৈরি ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করেন। কনস্টেবল থেকে অতিরিক্ত আইজি পর্যন্ত সব পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের জন্য বছরে অন্তত একবারের জন্য হলেও বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন।
হ্যান্ডস ফ্রি পুলিশিং চালুগত বছরের ১৬ ডিসেম্বর জনগণকে উন্নত পুলিশি সেবা প্রদানের জন্য হ্যান্ডস ফ্রি পুলিশিং চালু করতে মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের জন্য টেকনিক্যাল বেল্ট চালু করেন বেনজীর আহমেদ। এর ফলে দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ সদস্যরা হ্যান্ডস ফ্রি রেখে জনগণকে উন্নত সেবা দিতে সক্ষম হচ্ছে। এতে রয়েছে অত্যাধুনিক অপারেশনাল গিয়ার ‘টেকনিক্যাল বেল্ট’। এই বেল্টে প্রয়োজনীয় অন্যান্য সরঞ্জামের সঙ্গে একটি অংশে থাকবে হোলস্টার। তাতেই রাখা থাকবে ক্ষুদ্রান্ত্র। পর্যায়ক্রমে সব মহানগর, রেঞ্জ ও জেলা পুলিশে এ অপারেশনাল গিয়ার চালু করা হবে। তাই বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া পুলিশকে বড় আর ভারী অস্ত্র বহন করতে দেখা যাবে না।
সাইবার হয়রানির শিকার নারীদের পাশে পুলিশনারীদের জন্য নিরাপদ সাইবার স্পেস নিশ্চিতে গত বছরের ১৬ নভেম্বর ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’ ফেসবুক পেজ চালু করেন ড. বেনজীর আহমেদ। কোনো নারী সইবার বুলিংয়ের শিকার হলে তিনি সহজেই এ পেজের মাধ্যমে প্রতিকার পাচ্ছেন। প্রতিটি থানায় চালু করা হয়েছে নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে পুলিশপ্রধান বলেন, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন এবং টেলিকমিউনিকেশন অ্যাক্টে ৬ হাজার ৯৯টি মামলা হয়।
(Police Cyber Support for Women- PCSW) নামে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিয়ে অভিযোগ জানাতে হবে। এছাড়া cybersupport.women@police.gov.bd ঠিকানায় ই–মেইল করে অভিযোগ জানানো যাবে।
স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পরিবহনে যতো উদ্যোগকেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে বিশ্বমানের বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েও কাজ করছেন আইজিপি। উদ্যোগ নিয়েছেন ক্যান্সার ইউনিট ও ক্যাথল্যাব স্থাপনের। তিনি ঢাকায় একটি বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল স্থাপন এবং অন্যান্য বিভাগীয় হাসপাতালকে আধুনিকায়নের উদ্যোগও নেন।
পুলিশ মেডিকেল কোর গঠনের কাজও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পুলিশ সদস্যদের সন্তানদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৮টি বিভাগীয় শহরে উন্নতমানের স্কুল অ্যান্ড কলেজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাহিনীর সদস্যদের কল্যাণে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। পুলিশ সদস্যদের জন্য কমিউনিটি ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যাংকিং সুবিধা সহজ করা হয়েছে। আইজিপির বিশেষ উদ্যোগে পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে হ্রাসকৃত ভাড়ায় দূরপাল্লার বাস সার্ভিস চালু করা হচ্ছে।
বিট পুলিশিং কার্যক্রম চালুবিট পুলিশিং এমন একটি কার্যক্রম, যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভব। সেবা নিতে জনগণকে পুলিশের কাছে যেতে হবে না। পুলিশই জনগণের কাছে যাবে সেবা নিয়ে। এ ধারণা থেকেই বিট পুলিশিং সম্প্রসারণের কাজ শুরু করা হয়। পুলিশের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে সারাদেশকে ৬ হাজার ৯১২টি বিটে ভাগ করে প্রতি বিটে একজন কর্মকর্তা পদায়নের মাধ্যমে বিট পুলিশিং কার্যক্রম চালু করেন ড. বেনজীর।
পুলিশের জন্য একই নম্বরড. বেনজীর আহমেদ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের প্রতিটি শাখার জন্য সুনির্দিষ্ট এওআর প্রণয়ন এবং কর্ম বণ্টন করেন। গত বছরের শেষে দিকে তিনি বাংলাদেশ পুলিশের সকল সদস্যের জন্য একই সিরিয়ালের (০১৩২) মোবাইল নম্বর চালু করেন।
আইজিপির উদারতাপেশার আনুষ্ঠানিকতার বাইরে ড. বেনজীর আহমেদ অনানুষ্ঠানিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, শুভানুধ্যায়ী ও সাংবাদিক পরিবারের প্রতি সহযোগিতা করেছেন। করোনায় প্রাণ হারানো সাংবাদিক ও পুলিশ পরিবারকে নগদ টাকা ও উপহারসামগ্রী পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রাইভেট হাসপাতাল ভাড়া করাসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। কোয়ারেন্টাইনে ও আইসোলেশনে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের খোঁজ-খবর রাখার জন্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে পরিদর্শন কমিটিও করেছেন তিনি।
পুলিশের সর্বোচ্চ পদক লাভচাকরিজীবনে সর্বোচ্চ সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের স্বীকৃতি হিসেবে বেনজীর আহমেদ অর্জন করেছেন পুলিশের সর্বোচ্চ পদক বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম)। ২০২০ সালে ষষ্ঠবারের মতো বিপিএম (সাহসিকতা) অর্জনের রেকর্ড গড়েন তিনি। এর আগে ২০১১, ২০১২, ২০১৪, ২০১৬ ও ২০১৯ সালে এই পদক তার সাফল্যের মুকুটে যোগ হয়।
ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন২০১৯ সালে বেনজীর আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। কন্ট্রিবিউশন অব বাংলাদেশ ইউএন পিস কিপিং ফোর্স টু আওয়ার ন্যাশনাল ইকোনমিক শিরোনামে তার অভিসন্দর্ভে জাতীয় অর্থনীতিতে পুলিশ শান্তিরক্ষীদের অবদান এবং শান্তিরক্ষা মিশনে প্রায় তিন দশক দায়িত্ব পালনে লব্ধ অভিজ্ঞতা দেশের পুলিশ বাহিনী সংগঠনে ইতিবাচক পরিবর্তনে কী ধরনের ভূমিকা পালন করেছে, তা তুলে আনেন বেনজীর আহমেদ।
বেনজীর আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া প্যাসিফিক সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্ট্যাডিজ, অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা চার্লস স্ট্রার্ট ইউনিভার্সিটি ও সিঙ্গাপুরের বিশ্বব্যাংক আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেও অধ্যয়ন করেন।
টিটি/জেডএইচ/এইচএ/জিকেএস