বিনোদন

সুরের ইন্দ্রজালে বিমোহিত ছিলো উৎসবের দ্বিতীয় দিন

বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের দ্বিতীয় দিনটি ছিলো পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর জন্য প্রতিক্ষার। খ্যাতিমান এই সংগীতকারের জন্য এদিন সন্ধ্যা থেকেই সময় গুনছিলেন অনেকে। অবশেষে শেষ রাতে মঞ্চে এলেন তিনি। মাতিয়ে গেলেন সুর আর সংগীতের পিপাসু হাজারো প্রাণ। বিদায়ের আগে নতুন দিনের বার্তা তিনি দিয়ে গেলেন ‘যামিনী হলো যে ভোর’ গানটি পরিবেশন করে। আর তার গান দিয়েই শেষ হলো পাঁচ দিনব্যাপি বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের দ্বিতীয় দিন।এর আগে গেল শনিবার, ২৮ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় বনানীর আর্মি স্টেডিয়ামে শুরুতেই ধ্রুপদ পরিবেশন করে দ্বিতীয় দিনের উৎসব শুরু করেন বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থী অভিজিৎ কুণ্ডু। তিনি রাগ ভূপালি পরিবেশন করেন। তাকে পাখওয়াজে সঙ্গত করেন প্রতাপ আওয়াদ। শিল্পীকে উৎসব স্মারক তুলে দেন পরম্পরা সংগীতালয়ে তার গুরু পণ্ডিত উদয় ভাওয়ালকর।এরপর সরস্বতী বীণা পরিবেশন করেন জয়ন্তী কুমারেশ। শিল্পীকে পাখওয়াজে সহযোগিতা করেন আর শংকরানারায়ণন এবং ঘটমে এস কৃষ্ণস্বামী। বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবে এবারই প্রথম সরস্বতী বীণা পরিবেশিত হলো। শিল্পীর হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন মহুয়া খায়ের।   তারপর খেয়াল নিয়ে মঞ্চে আসেন বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থী সুস্মিতা দেবনাথ। তিনি বেহাগ রাগে খেয়াল ও তারানা পরিবেশন করেন। সুস্মিতা দেবনাথকে তবলায় সহযোগিতা করেন ইফতেখার আলম প্রধান এবং হারমোনিয়ামে বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী। শিল্পীর হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন সঞ্জীবনী কশলকর। একটু গাম্ভীর্য নিয়ে মঞ্চে এসে রাগ ইমন ও আড়ানায় ধ্রুপদ পরিবেশন করেন পণ্ডিত উদয় ভাওয়ালকার। তাকে পাখওয়াজে সঙ্গত দেন  প্রতাপ আওয়াদ। পণ্ডিত উদয় ভাওয়ালকারের হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন স্কয়ার টয়লেট্রিজের ভাইস চেয়ারম্যান রত্না পাত্র।  এরপর পণ্ডিত সুরেশ তালওয়ালকারের একক তবলা পরিবেশনা করেন। শিল্পীর সঙ্গে তবলায় ছিলেন তার কন্যা সাওয়ানি তালওয়ালকার, পাখাওয়াজে ওঙ্কার দেলভি, কণ্ঠসংগীতে ভিনায় রামাদাসান এবং হারমোনিয়ামে অজয় যোগলেকার। তাদের হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।এরপরের পরিবেশনা ছিলো ড. বালমুরালী কৃষ্ণের কর্ণাটকি সংগীত। তার সঙ্গে বাঁশিতে ছিলেন পণ্ডিত রণু মজুমদার। শিল্পীদের সঙ্গে তবলায় সঙ্গত করেন পণ্ডিত অভিজিৎ ব্যানার্জী। কন্ঠসংগীতে সহযোগিতা করেন ড. কে. কৃষ্ণাকুমার, বেহালায় বিভি রাগাভেন্দ্র রাও, মৃদঙ্গমে এম এন সুব্রমানয়াম এবং তানপুরায় উৎপল রায়। এই শিল্পীদের হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাষ্টের সচিব হাফিজুর রহমান এবং বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের।পরবর্তী পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসেন শুভায়ূ সেন মজুমদার। তিনি এস্রাজে রাগ মালকোশ এবং রাগ খাম্বাজ পরিবেশন করেন। শিল্পীকে তবলায় সহযোগিতা করেন পণ্ডিত অভিজিৎ ব্যানার্জী এবং তানপুরায় তালহা বিন আলি। পরিবেশনা শেষে একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী সামিয়া জামান শিল্পীর হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন।আর সর্বশেষ ছিলেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী। শিল্পীকে তবলায় সহযোগিতা করেন সত্যজিৎ তালওয়ালকার, হারমোনিয়ামে অজয় যোগলেকার এবং কণ্ঠসংগীতে সহযোগিতা করেন অনল চ্যাটার্জী। পরিবেশনা শেষে শিল্পীর হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, এম পি।     ধারাবাহিকতায় আজ রোববার তৃতীয় দিনের উৎসব শুরু হবে যথারীতি সন্ধ্যা ৭টায়। চলবে পরদিন ভোর ৫টা ১০ মিনিট পর্যন্ত। তৃতীয় দিনের উৎসবে অংশ নেবেন ওয়ার্দা রিহাব ও তার দল (মনিপুরি নৃত্য), ওস্তাদ ওয়াসিফ ডাগর (ধ্রুপদ), ইউসুফ খান (সরোদ), ড. এন রাজম (বেহালা),  বিদুষী শ্রুতি সাদেলিকর (খেয়াল), গুরু কড়াইকুডি মানি (মৃদঙ্গ) ও বিদুষী শুভা মুডগাল (খেয়াল)।    উল্লেখ্য, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজিত বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব ২০১৫- এর নিবেদক স্কয়ার গ্রুপ। আয়োজন সমর্থন করছে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড। উৎসব পাওয়ারড বাই রবি আজিয়াটা লিমিটেড। অনুষ্ঠানের সম্প্রচার সহযোগী মাছরাঙা টেলিভিশন। মিডিয়া পার্টনার আইস বিজনেস টাইমস, আইস টুডে ও বেঙ্গল বারতা। আতিথেয়তা সহযোগী হিসেবে আছে লা মেরিডিয়ান ঢাকা। সহযোগিতায় বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয় ও সৌজন্যে বেঙ্গল ডিজিটাল। সার্বিক সহযোগিতায় পারফেক্ট হারমনি প্রোডাকশন, সিঙ্গাপুর। ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা ব্লুজ কমিউনিকেশনস। এবারের উৎসবটি উৎসর্গ করা হয়েছে বরেণ্য শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীকে।এলএ

Advertisement