মতামত

জনসংখ্যা হোক জনসম্পদ

জনসংখ্যাকে জন সম্পদে পরিণত করতে না পারলে বাংলাদেশের বিপুল জনসংখ্যা বিরাট বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। জনশক্তি রপ্তানি জন সংখ্যাকে জনশক্তিতে পরিণত করার একটি উৎকৃষ্ট উপায়। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের একটি বড় খাত হচ্ছে জনশক্তি রপ্তানি। বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই এ খাত থেতে বিপুল পরিমাণ রেমিটেন্স পাচ্ছে। এটি দ্বিগুণ করা সম্ভব যদি চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি করা যায়। এ জন্য নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করা, অভিবাসন ব্যয় কমানো, দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির উদ্যোগ নিতে হবে। সহযোগী একটি দৈনিকের এ সংক্রান্ত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে- গত জুন মাসে বাংলাদেশ থেকে ১৫ লাখ কর্মী নেওয়ার ঘোষণা দেয় মালয়েশিয়া। অভিবাসন ব্যয় কমানোর জন্য জিটুজি পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি করা হত সরকারের সাথে চুক্তির মাধ্যমে। এতে মাত্র ৩৩ হাজার ৫০০ টাকায়ই একজন শ্রমিক মালয়েশিয়ায় যেতে পারতো। এ পদ্ধতিতে  সারাদেশে প্রায় ১৪ লাখ কর্মী মালয়েশিয়া যেতে নিবন্ধন করলেও নানামুখি অপতৎরতার কারণে  গত তিন বছরে বনায়ন খাতে মাত্র ১০ হাজার কর্মী গেছেন। এখন পুরোপুরিই বন্ধ আছে। সর্বশেষ জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে জনশক্তি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।  মালয়েশিয়া শর্ত দিয়েছে, কর্মী ব্যবস্থাপনার কাজ মালয়েশিয়ান প্রতিষ্ঠান সানারফ্ল্যাক্সকে দিতে হবে। এতে অভিবাসন ব্যয় বেড়ে যাবে কর্মীপ্রতি ১৮ থেকে ৫৭ হাজার টাকা। এছাড়া এই প্রতিষ্ঠানটি একটি বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান। এতে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা আছে সংশ্লিষ্টদের। সভ্যতার ইতিহাস অভিবাসনের ইতিহাস। যেখানে প্রয়োজন আছে মানুষ সেখানে যাবে। বৈধ পথে যদি যেতে না পারে তখনই সাগর পাড়ি দেওয়া কিংবা অন্য উপায়ে যাওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ অভিযাত্রার ঘটনা ঘটে। এ জন্য  কাজের সুযোগ করে দিতে হবে। মালয়েশিয়ারও কর্মী প্রয়োজন। বাংলাদেশেরও কর্মী পাঠানোর সুযোগ রয়েছে। এ অবস্থায় দু`টি দেশকেই সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে। অভিবাসন ব্যয় বাড়িয়ে, নানা শর্তের বেড়াজালে কর্মীদের আটকে দিলে সেটা আসলে কারো জন্যই ফলদায়ক হবে না। এ জন্য বাস্তবসম্মত পথে হাঁটতে হবে। মালয়েশিয়া এ ব্যাপারে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস।জনশক্তি রপ্তানির প্রবাহ ধরে রাখতে হলে বাংলাদেশকেও নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি কর্মীরা রয়েছে। সেখানে চলছে অস্থিরতা। এই অবস্থায় জনশক্তি রপ্তানি খাতে ধস নামার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। এছাড়া দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে। বিশ্বব্যাপী যাতে বাংলাদেশের কর্মীদের চাহিদা সৃষ্টি করা যায় সে ব্যাপারেও পদক্ষেপ নিতে হবে। এইচআর/এমএস

Advertisement