দেশজুড়ে

তালাকপ্রাপ্ত ‘স্ত্রীকে’ ফেরাতে শ্যালককে অপহরণ, ৫ দিন পর উদ্ধার

প্রায় ৬ মাস আগে তালাক দেয়া স্ত্রীকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে তার ফুফাতো ভাইকে অপহরণ করেন ‘দুলাভাই’। পরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে অপহরণের পাঁচদিন পর অপহরণের শিকার যুবককে উদ্ধার করেছে করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেফতার দুই অপহরণকারী আদালতে অপরাধ স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।মাদারীপুরের শিবচরে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রায় ৯ বছর আগে শিবচর উপজেলার চরজানাজাত ইউনিয়নের সামাদ খার কান্দি গ্রামের কলম ঢালীর ভাগ্নি তাসলিমার সঙ্গে কালকিনি উপজেলার দক্ষিণ বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের খাসেরহাট গ্রামের মো. মজিবুর বেপারীর ছেলে মো. মিলন বেপারীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই মনোমালিন্য হতো। এরই প্রেক্ষিতে প্রায় ৬ মাস আগে মিলন বেপারীকে তালাক দেন তাসলিমা।

কিন্তু এটা মেনে নিতে পারেননি মিলন। তাসলিমাকে ফিরে পেতে তাই প্রায়ই ফোন করে বিরক্ত করতেন। গত ১৭ এপ্রিল বিকেলে শিবচরের কাঁঠালবাড়ি পুরাতন ঘাটের গোলচত্বর এলাকায় তাসলিমার ফুফাতো ভাই নবীন ঢালীকে (২৭) একা পেয়ে তার সঙ্গে কথা আছে বলে জানান মিলনসহ অন্যরা। নবীনকে ডেকে মোটরসাইকেলে করে মিলন বেপারী, নয়ন সরদার, শাকিল ফকির, মাসুম সরদার ও ইব্রাহিম সরদার কালকিনির খাসেরহাট এলাকায় নিয়ে একটি বাড়িতে আটকে রাখেন।

এদিকে ছেলেকে না পেয়ে নবীনের বাবা কলম ঢালী ১৮ এপ্রিল শিবচর থানায় একটি জিডি করেন। ১৯ এপ্রিল সকালে মিলন বেপারী তাসলিমাকে মোবাইলে ফোন করে জানান নবীনকে তিনি অপহরণ করেছেন। তাসলিমা তার কাছে ফিরে গেলে অথবা ৮ লাখ টাকা দিলে তাহলে নবীনকে ছেড়ে দেয়া হবে বলে জানান তিনি। তাসলিমার কাছ থেকে এ কথা জানতে পেরে কলম ঢালী পুলিশকে জানান।

Advertisement

পরে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নবীনকে উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করে। বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে পুলিশ কালকিনির আউলিয়ারচর গ্রাম থেকে অপহরণকারী নয়ন সরদার (২৫) ও শাকিল ফকিরকে (২২) গ্রেফতার করেন। তাদের দেয়া তথ্যমতে নাগেরপাড় এলাকা থেকে নয়ন ঢালীকে উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) গ্রেফতারকৃতদের মাদারীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হলে তারা অপহরণের কথঅ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

অপহরণের শিকার নয়ন ঢালী বলেন, ‘আমার সঙ্গে কথা আছে বলে মোটরসাইকেলে তুলে কালকিনির একটি বাড়িতে আটকে রেখে মারধর করেছেন তারা। তাসলিমা ফিরে না গেলে আমাকে মেরে ফেলার ভয় দেখাতেন তারা।’

তাসলিমা বলেন, ‘তালাক দেয়ার পরও আমাকে ফোন করে হুমকি দিতেন মিলন। সর্বশেষ আমার ফুফাতো ভাইকে অপহরণ করে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে আমাকে ফিরে যেতে বলেন, আর ফিরে না গেল ৮ লাখ টাকা দিতে হবে বলে জানান।’

Advertisement

কলম ঢালী বলেন, ‘আমার ছেলেকে যারা অপহরণ করে মারধর করেছেন তাদের সবাইকে যেন গ্রেফতার করা হয়।’

শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মিরাজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘অপহরণের ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

ইএ/জিকেএস