করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। সরকারি নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ রয়েছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের লঞ্চ সার্ভিস। বন্ধ রয়েছে যাত্রী পারাপার। আর এ সুযোগে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে করে পার করা হচ্ছে যাত্রী ও মোটরসাইকেল।
Advertisement
সরেজমিন পাটুরিয়া ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশাসহ বিভিন্ন ছোট যানবাহনে করে মানুষ ঘাটে আসছে। ভেঙে ভেঙে ঘাটে পৌঁছতে তাদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ।
রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোনো ফেরি ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে না। অনেক সময় অ্যাম্বুলেন্স পেতে ফেরিগুলোকে অপেক্ষায় করতে হয় দুই-তিন ঘণ্টা পযর্ন্ত। এসময় ঘাটে আসা যাত্রী এবং ব্যক্তিগত গাড়িগুলোকেও অপেক্ষায় থাকতে হয়। একটি ফেরি ছাড়ার প্রস্তুতি নিতেই হুমড়ি খেয়ে পড়েন যাত্রীরা।
ফেরিতে পার হতে গেলে দীর্ঘসময় অপেক্ষায় থাকতে হয় এজন্য বিকল্প হিসাবে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে করে নদী পার হচ্ছেন যাত্রীরা। জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও ট্টলারেই পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন শত শত মানুষ। বেশিরভাগের মুখে নেই মাস্ক। উপেক্ষিত সামাজিক দূরত্বও।
Advertisement
বিআইডব্লিউটিসি’র কর্মকর্তা এবং নৌ-পুলিশের চোখের সামনেই ট্রলারে যাত্রী পারাপার হলেও তা বন্ধে তাদের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
অভিযোগ রয়েছে, ট্রলার মালিকদের কাছ থেকে উৎকোচ নিচ্ছে ফেরিতে যাত্রী পারাপার টিকিটের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারের লোকজন। প্রতি ট্টিপে ১০০ টাকা করে আদায় করেছেন তারা।
ঢাকা থেকে মোটরসাইকেল করে পাটুরিয়া ঘাটে আসা আশিক ইসলাম বলেন, আমার মা অসুস্থ। তাই ফরিদপুরে যাবো। অনেক কষ্ট করে ঘাটে এসেছি। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে ঘাটে বসে আছি। কিন্তু নদী পার হতে পারছি না। তাই বাধ্য হয়ে ট্রলারে যাচ্ছি।
দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ট্রলারে করে পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছেছেন সোহাগ মিয়া। তিনি জানান, ট্রলারে যাত্রী ভাড়া ৫০ এবং মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়েছে ৫০০ টাকা। এটি এক ধরনের জুলুম। মানুষের বিপদকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা করছে ট্রলারগুলো।
Advertisement
ট্রলার চালক আরিফ মিয়া বলেন, ‘লঞ্চ, ফেরি বন্ধ। যাত্রীরা পারাপার করতে পারছে না। তারা বাধ্য হয়ে ট্রলারে পার হচ্ছে। সবারই বিপদ। তারা যাচ্ছে দেখেই আমরা তাদের নিচ্ছি। প্রশাসনের লোকজন মাঝে মাঝে বাধা দেয়। এরপরও কী করার আছে? পেটের দায়ে নৌকা চালাই’।
বিআইডব্লিউটিসির টার্মিনাল সুপারেনটেন্ড হারুনার রশিদ বলেন, ফেরির পন্টুনে না ভিড়তে ট্রলারগুলোকে বলা হয়েছে। এরপরও সুযোগ পেলেই তারা যাত্রী তুলে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।
শিবালয় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু দারদা বলেন, ট্রলারে অবৈধভাবে যাত্রী পারাপার বন্ধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ট্রলারকে জরিমানাও করা হয়েছে। এরপরও প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ট্রলার মালিক যাত্রী পারাপার করছে।
এ বিষয়ে আরো কঠোর অভিযান চালানো হবে বলে জানান তিনি।
বি.এম খোরশেদ/এসএমএম/এমএস