অর্থনীতি

নিত্যপণ্যে অনিয়ম : ৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা জরিমানা

রমজান মাস ও করোনা পরিস্থিতিতে নিত্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সারাদেশে দিনব্যাপী অভিযান পরিচালনা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। অভিযানকালে নকল পণ্য, ওজনে কারচুপিসহ ভোক্তাস্বার্থ বিরোধী বিভিন্ন অপরাধে ১০৩ প্রতিষ্ঠানকে ৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) অধিদফতরের মহাপরিচালকের (ডিজি) প্রদত্ত ক্ষমতাবলে দিনব্যাপী এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এদিন পবিত্র রমজান ও করোনা মহামারিকে কেন্দ্র করে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে রাজধানী ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন বাজারে অভিযান পরিচালনা করে অধিদফতর।

ঢাকাসহ সারাদেশে ৫০টি মনিটরিং টিম ভোক্তাস্বার্থ বিরোধী বিভিন্ন অপরাধে ১০৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে মোট ৩ লাখ ৩৩ হাজার জরিমানা আরোপ ও আদায় করে।

Advertisement

ঢাকা মহানগরীতে ৭টি মনিটরিং টিম ১০টি বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজারে তদারকি করে। রাজধানীর এসকল বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ফাহমিনা আক্তার, সহকারী পরিচালক রোজিনা সুলতানা, প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইন্দ্রানী রায় ও সহকারী পরিচালক জান্নাতুল ফেরদাউস।

এ ছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মোবাইল টিমের সঙ্গে বাজার তদারকি করেন অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রজবী নাহার রজনী, প্রনব কুমার প্রামানিক ও ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহমুদা আক্তার।

এ ছাড়া রাজধানীর বাইরে বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক ও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালকগণের নেতৃত্বে জেলা উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন বাজারে তদারকি ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

রাজধানীর মিরপুর শাহ আলী বাজার, মিরপুর ৬নং বাজার, রাইনখোলা বাজার, কল্যাণপুর নতুন বাজার, মোহাম্মদপুর টাউনহল, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, যাত্রাবাড়ী, হাতিরপুল,পলাশী, নিউমার্কেট এলাকার বিভিন্ন কাঁচাবাজার, নিত্যপণ্যের দোকান, সুপারশপ ও ফার্মেসিতে তদারকিকালে সবজি, পেঁয়াজ, ছোলা,ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি,খেজুরসহ অন্যান্য নিত্যপণ্য যৌক্তিকমূল্যে বিক্রয় হচ্ছে কিনা তা তদারকি করা হয়।

Advertisement

একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মূল্য তালিকা সঠিকভাবে প্রদর্শন, নির্ধারিত দামে পণ্য বিক্রয়, পণ্যের ক্রয় রসিদ সংরক্ষণ, মূল্য তালিকায় প্রদর্শিত মূল্যের সঙ্গে বিক্রয় রসিদের গরমিল, সঠিক ওজন, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ও ওষুধ, নকল পণ্যসহ ভোক্তাস্বার্থ বিরোধী কোনো অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা হয়। তদারকিকালে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল পরিলক্ষিত হয় এবং সরকার নির্ধারিত দামে ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, ডাল,চিনিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্য বিক্রি হতে দেখা যায়। এসময় পণ্যের মূল্যতালিকা প্রদর্শন না করা, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ও ওষুধ বিক্রয়ের জন্য সংরক্ষণ করার অপরাধে কয়েকটি নিত্যপণ্যের দোকান ও ফার্মেসিকে জরিমানা আরোপ করা হয় এবং এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হতে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করা হয়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, স্বাস্থ্য বিভাগ, কৃষি বিভাগ, মৎস্য বিভাগ, ক্যাবসহ সংশ্লিষ্ট শিল্প ও বণিক সমিতির প্রতিনিধিবৃন্দ অধিদফতর পরিচালিত বাজার অভিযানে সহযোগিতা প্রদান করেন।

বাজার তদারকিকালে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীবৃন্দের মধ্যে ভোক্তা অধিকার বিষয়ক লিফলেট, প্যাম্পলেট বিতরণ এবং করোনাকালে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনের জন্য হ্যান্ডমাইকে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হয়।

এ ছাড়াও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার নিশ্চিতকরণসহ স্থিতিশীল বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।

বাজার তদারকির পাশাপাশি ঢাকাসহ সারাদেশে টিসিবির সাশ্রয়ী মূল্যের পণ্যসমূহ (ট্রাক সেল) যথাযথ নিয়ম মেনে বিক্রয় হচ্ছে কিনা তা তদারকি করা হয়।

এ বিষয়ে অধিদফতরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা বলেন, ‘পবিত্র রমজান ও মহামারিকালে নিত্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ সারাদেশে প্রতিদিন অধিদফতরের বিশেষ বাজার তদারকি ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম চলছে। ভোক্তাস্বার্থ সুরক্ষায় নিত্যপণ্যের বাজারে এই তদারকি ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

নিত্যপণ্য যৌক্তিক ও ন্যায্যমূল্যে বিক্রয় করতে সম্মানিত ব্যবসায়ীগণকে আহ্বান জানান তিনি। এ ছাড়াও তিনি নিত্যপণ্যের বাজারে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনের জন্য ভোক্তা-ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেন।

ইএআর/ইএ/এএসএম