জাতীয়

সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ‘ঠাঁই নেই’ দশা

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশেষ ফ্লাইটে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসী যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে আসা যাত্রীদের প্রায় শতভাগই প্রবাসী কর্মী এবং সংখ্যায় বেশি হওয়ায় রাজধানীর আশকোনা হাজি ক্যাম্প ও উত্তরা দিয়াবাড়ির দুটি সরকারি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে তাদের রাখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে।

Advertisement

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে আজ বিকেল তিনটা পর্যন্ত সহস্রাধিক যাত্রী ফিরেছেন। এর আগের তিন দিনে নয় শতাধিক যাত্রী ফেরেন।

তিনি জানান, রাজধানীর দুটি সরকারি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের ধারণক্ষমতা দুই হাজার। ইতিমধ্যেই ধারণক্ষমতার বেশি প্রবাসী কর্মী ফেরত এসেছেন। সংক্রমণের আশঙ্কায় তাদের সেখানে রাখা যাচ্ছে না। আবার নিজ খরচে সরকার নির্ধারিত আবাসিক হোটেলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে যেতেও তারা অপারগতা জানাচ্ছেন। এ নিয়ে মহাঝামেলা তৈরি হয়েছে, বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।

প্রবাসী কর্মীদের বিষয়টি মাথায় রেখে ১৭ এপ্রিল (শনিবার) থেকে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুরে শতাধিক বিশেষ ফ্লাইটের অনুমোদন দেয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

Advertisement

বেবিচকের এ সংক্রান্ত এক নির্দেশনায় বলা হয়, প্রবাসী কর্মীরা এসব ফ্লাইটে করে তাদের কর্মস্থলে যোগ দিতে পারবে এবং ওই সব দেশে যদি কোনো বাংলাদেশি আটকে থাকেন, আর তারা যদি দেশে ফিরতে চান তাহলে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করে ফেরা যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে তাদের কোভিড নেগেটিভ সনদ থাকতে হবে এবং দেশে ফেরার পর ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকার শর্ত মানতে হবে।

শাহজালাল বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য বিভাগের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, ১৭ এপ্রিল চারটি ফ্লাইটে ৩১ জন যাত্রী ফেরত আসেন। তাদের মধ্যে ৩০ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে ও একজনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। ১৮ এপ্রিল ১১টি ফ্লাইটে ফেরা ২২২ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে ও পাঁচজনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে, ১৯ এপ্রিল ১৩টি ফ্লাইটের ২৫৪ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টোইনে ও ১০ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে, ২০ এপ্রিল ১৯টি ফ্লাইটের ৪৩৮ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টোইনে ও ২৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়।

আজ (২১ এপ্রিল) সকাল ৮টার পর আরও কমপক্ষে ৭০০-৮০০ যাত্রী ফেরত আসেন। তাদের সংখ্যা আশকোনা হাজি ক্যাম্প ও উত্তরা দিয়াবাড়ির সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের ধারণক্ষমতার বেশি হওয়ায় বিপত্তি দেখা দিয়েছে। বিষয়টি সরকারের উচ্চমহলে জানানো হয়েছে।

একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ইতিপূর্বে যুক্তরাজ্যফেরত যাত্রীদের নিজ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকার বাধ্যবাধকতা থাকায় ফেরত আসা যাত্রীদের প্রত্যেকেই সরকার নির্ধারিত হোটেলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকলেও গত তিন-চার দিনে ফেরত আসা যাত্রীদের অধিকাংশই প্রবাসী কর্মী হওয়ায় তারা নিজ খরচে আবাসিক হোটেলে যেতে অপারগতা প্রকাশ করছেন। সুনির্দিষ্টভাবে কোনো নির্দেশনা না থাকায় তাদের আশকোনা হাজি ক্যাম্প ও উত্তরা দিয়াবাড়ির সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠাতে হচ্ছে। এভাবে যাত্রী ফিরে আসলে তাদের কোথায় কোয়ারেন্টােইনে রাখা হবে, তা নিয়ে চিন্তায় আছেন বলে তিনি জানান।

Advertisement

এমইউ/এমএইচআর/জেআইএম