রাজধানীর উত্তরায় কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের ভিড় বাড়ছে। হাসপাতালটিতে ইনটেনসিভ করনারি কেয়ার ইউনিটে (আইসিসিইউ) কোনো শয্যা ফাঁকা নেই।
Advertisement
এদিকে করোনা পরীক্ষা যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে টিকা নেয়ার সংখ্যাও। হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা থাকলেও, তা ব্যবহারের জন্য অবকাঠামোর অভাব রয়েছে।
বুধবার (২১ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা গেছে, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে অনেক রোগী ভর্তি না হতে পেরে অন্য জায়গায় ছুটছেন।
টঙ্গীর বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে মাকে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু শয্যা ফাঁকা না থাকায় কুর্মিটোলা হাসপাতালে যান।
Advertisement
অন্যদিকে টিকা দেয়ার সময় শেষ হলেও সেখানে প্রচুর লোককে যেতে দেখা যায়। নির্দিষ্ট সময় নমুনা পরীক্ষার জন্যও না যাওয়ায় ফিরে যাচ্ছেন অনেকে।
হাসপাতালটিতে কর্মরত একাধিক ব্যক্তি জানান, করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য আগের দিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ০১৩১৩৭৯১১৬১ নম্বরে ফোনে সিরিয়াল নিতে হয়। প্রতিদিন মাত্র ৫০ জনের সিরিয়াল নেয়া হয়। পরদিন সকাল ৯টা থেকে নেয়া হয় নমুনা। কিন্তু এসব নিয়ম না জানা থাকায় অনেকে নমুনা দিতে গিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের বালুর মাঠের অধিবাসী ইশতিয়াক আলী (৬১) করোনাভাইরাসের নমুনা দেয়ার জন্য দুপুরে কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে আসেন। কিন্তু সিরিয়াল না পাওয়ায় নমুনা দিতে পারেনি তিনি। দুপুর ২টা পেরিয়ে যাওয়ায় আগামীকালের সিরিয়ালও পাননি।
ইশতিয়াক আলী জাগো নিউজকে বলেন, এসব নিয়মকানুন জানা না থাকায় খুব সমস্যা হলো। ধুলোবালির মধ্যে হাসপাতালে আসায় শ্বাসকষ্ট আরও বেড়ে গেছে।
Advertisement
কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার সময় দুপুর ১টা পর্যন্ত। তবে এরপরও অনেক বয়োবৃদ্ধ সেখানে ভিড় করছেন।
করোনাকালে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের বেশকিছু নথি তলব করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৯ আগস্ট নথিপত্র তলব করা হয়। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চলাকালে মাস্ক-পিপিইসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি ক্রয় সংক্রান্ত দুর্নীতির অনুসন্ধানে বিল-ভাউচারসহ নথিপত্র চেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে দুদক।
রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালের সেবা আগের চেয়ে ভালো। রোগীদের পুষ্টিকর খাবার দেয়া হয়। রান্নাঘরও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন।
হাসপাতালের খাবারের ওপর অনেকেই ভরসা করতে পারছে না। তাই বাসা থেকে পানি, ভাত, মাছ, ডাল, মাংস, স্যুপ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফলমূল দেয়া হচ্ছে। কোন খাবার কোন রোগীর জন্য তা ট্যাগ লাগিয়ে দিচ্ছেন দায়িত্বরত আনসাররা।
এইচএস/এমএসএইচ/জেআইএম