আল্লাহ তাআলার অপার কৃপায় পবিত্র মাহে রমজানের রহমতের দশকের রোজা আমরা অতিবাহিত করার সৌভাগ্য পাচ্ছি, আলহামদুলিল্লাহ। রমজান মাস আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একটি বড় নেয়ামত। রমজানের রোজার মাধ্যমে আমরা সহজেই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারি।
Advertisement
আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহ, তিনি আমাদের সুস্থতার সঙ্গে রোজা রাখার তাওফিক দান করেছেন। মানুষ একটু চিন্তাভাবনা করলেই দেখবে যে, আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহরাজির কোনো শেষ নেই। তাই আমাদের সব সময় আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া জ্ঞাপন করতে থাকা উচিত।
পবিত্র মাহে রমজানে যারা নিষ্ঠার সঙ্গে রোজা রাখে এবং বিশেষ ইবাদতেরত থাকে তাদের কোনোভাবেই জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করতে পারবে না। হাদিস শরিফে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রোজা জাহান্নামের আগুন থেকে পরিত্রাণের জন্য একটি ঢাল এবং দুর্গ।’ (মুসনাদে আহমাদ)
Advertisement
একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যেই যারা রোজা রাখে তাদের সব পাপ আল্লাহ ক্ষমা করে দেবেন। হাদিস শরিফে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন ‘যে ব্যক্তি পূর্ণ বিশ্বাস সহকারে সওয়াবের উদ্দেশ্যে রমজানের রোজা রাখে, আল্লাহ পাক তার বিগত জীবনের সব গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (বুখারি)
আমাদের সেই রোজা রাখা উচিত, যা এই পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের উঠাবসা, চলাফেরা, সর্বোপরি আমাদের প্রতিটি কথা ও কাজ দ্বারা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যম হবে এবং আমাদের এসব আমল আল্লাহর সঙ্গে মিলিত করবে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘যারা আমার সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে পুরো চেষ্টা-সাধনা করে, আমি তাদের অবশ্যই আমাদের পথের দিকে আসার সুযোগ দেই।’ (সুরা আনকাবুত : আয়াত ৬৯)
Advertisement
মূলত যারা আল্লাহ তাআলার দিকে আসার চেষ্টা করে এবং তার সন্তুষ্টির প্রত্যাশী হয়; তিনি তাদেরকে তারই দিকে ফিরে আসার সুযোগ করে দেন। আর আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দিকে আসার ও সন্তুষ্টির পথগুলোর মধ্যে একটি পথ হল রমজানের রোজা। রোজাদারকে তিনি অনেক বেশি পছন্দ করেন বলেই জান্নাতে প্রবেশের জন্য বিশেষ একটি দরজা রেখেছেন। হাদিসে এসেছে-
- হজরত সাহল বিন সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জান্নাতের ৮টি দরজা রয়েছে। একটি দরজার নাম হচ্ছে- রাইয়ান। এ দরজা দিয়ে রোজাদারগণ ছাড়া আর কেউ প্রবেশ করবে না।’ (বুখারি)
- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন, ‘জান্নাতে রাইয়ান নামক একটি শাহী দরজা আছে যা দিয়ে একমাত্র রোজাদারগণই প্রবেশ করবে। অন্য কেউ সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (‘আর যে ব্যক্তি সেই রাইয়ান দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে সে আর কখনো পিপাসিত হবে না।’ (বুখারি ও মুসলিম)
সুতরাং আমাদের উচিত হবে, রমজানের আধ্যাত্মিক পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে পুণ্য কাজের মাধ্যমে জান্নাতের এ বিশেষ দরজা দিয়ে প্রবেশ করার সৌভাগ্য অর্জন করা। পুণ্যকর্মের মাধ্যমে আমাদের সেই সব উচ্চতায় পৌঁছার চেষ্টা করতে হবে যেখানে শয়তান পৌঁছতে পারে না।
রমজানের দিনগুলোতে দান-সাদকায় আমাদের সবাইকে অগ্রগামী হতে হবে, কেননা আমাদের রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উত্তম জীবনাদর্শ অনুসরণ করতে হবে। তিনি যেভাবে পবিত্র মাহে রমজানকে অতিবাহিত করেছেন ঠিক সেভাবে আমাদেরও রমজানের দিনগুলো অতিবাহিত করার চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জিকেএস