দেশজুড়ে

যুবকের গলায় অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে বিপত্তি ঘটালেন শিশু বিশেষজ্ঞ

প্রেসক্রিপশনে রয়েছে তিনি শিশু বিশেষজ্ঞ। হাসপাতালে চিকিৎসাও দেন শিশুদের। কিন্তু হঠাৎ নাক-কান-গলার চিকিৎসা দিতে গিয়ে এক তরুণকে চরম ভোগান্তিতে ফেলেছেন কক্সবাজার শহরের সেন্ট্রাল হসপিটালের চিকিৎসক মো. আব্দুল আউয়াল প্রমাণিক।

Advertisement

নিজের প্রেসক্রিপশনে শিশু চিকিৎসক হিসেবে পরিচিতি থাকলেও তিনি সকল রোগের চিকিৎসা করান এবং করতে পারেন বলে দম্ভ প্রকাশ করেন অভিযুক্ত এ চিকিৎসক।

জানা যায়, শনিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে খাবার খেতে বসেন কক্সবাজার সদরের খরুলিয়া কোনারপাড়া এলাকার মোহাম্মদ আজিম (২২)। খাবারের এক পর্যায়ে দুর্ঘটনাবশত তার গলায় মাছের কাঁটা আটকে যায়। বিঁধে থাকা মাছের কাঁটা দূর করতে আজিম পরদিন ছুটে যান শহরের সেন্ট্রাল হসপিটালে।

কিন্তু সেখানে গিয়ে তার সমস্যার কথা খুলে বলতেই রিসিপশনিস্ট এক নারী তাকে (আজিম) ডা. আব্দুল আউয়ালের চেম্বারে নিয়ে যান। ডাক্তার কিছুক্ষণ তাকে দেখে ৫শ' টাকা ভিজিট হিসেবে নেন এবং পরামর্শ দেন অপারেশনের। কিন্তু তার বিনিময়ে ৫ হাজার টাকা লাগবে বলে জানান ডা. আউয়াল।

Advertisement

ব্যথায় কাতর আজিম দিক-বেদিক বিবেচনা না করে ব্যথা সারাতে ডাক্তারের চাহিদা অনুযায়ী বিকাশে থাকা ৪ হাজার টাকা ডাক্তারের হাতে তুলে দেন। এরপর ডাক্তার আউয়াল তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে গলায় দু’ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের চেষ্টা করেন।

অসুস্থ আজিম অস্ত্রোপচারের যন্ত্রণা সইতে না পেরে চিৎকার চেচামেচি শুরু করলে ডাক্তার উত্তেজিত হয়ে গালিগালাজও করেন বলে দাবি করেন আজিম। তাতেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ডাক্তার তাকে অজ্ঞান করার কথা বলেন। এ সময় গলার ব্যথা আর ডাক্তারের দেয়া মরণযন্ত্রণা সইতে না পেরে আজিম তার স্বজনদের খবর দেন। পরে তার বোন আর দুলাভাই চেম্বারে হাজির হলে ডাক্তার আউয়াল তাকে নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ অন্য কোনো চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে পরামর্শ দেন।

ভুক্তভোগী আজিমের বোন ইসমত আরা জানান, গলায় সামান্য মাছের কাঁটা বিঁধলে সুস্থ সবল অবস্থায় তার ভাই ডাক্তারের কাছে যায়। খবর পেয়ে ডাক্তারের চেম্বারে ছুটে গিয়ে দেখি আজিমকে ডাক্তার আউয়াল অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে আরও অসুস্থ করে ফেলেছেন। এ সময় ডাক্তারের সাথে বাগবিতণ্ডায় জড়ালে তিনি ৩ হাজার টাকা ফেরত দেন।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে চিকিৎসক আবদুল আউয়াল প্রামানিক চিকিৎসার কথা স্বীকার করে দাম্ভিকতার সাথে বলেন, আমি শিশুদের ডাক্তার হলেও সব রোগের চিকিৎসা করি। চেষ্টা করেছিলাম তার (আজিমের) সমস্যা সারাতে। কাজ না হওয়ায় তাকে অন্য ডাক্তারের কাছে হস্তান্তর করেছি।

Advertisement

বিষয়টি কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমানকে অবগত করলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

সায়ীদ আলমগীর/এফএ/জেআইএম