সাতক্ষীরায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১২০০ ছাড়িয়েছে। বেড়েই চলছে আক্রান্তের হার। তবে জেলায় নেই পর্যাপ্ত আইসিইউ ও শয্যা।
Advertisement
রোববার (১৮ এপ্রিল) নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরো আটজন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৩৩ জনে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এভাবে বাড়তে থাকলে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে ঢাকা এবং চট্টগ্রামকেও। সারা দেশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু থাকায় জেলার মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি প্রবল।
সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ১৪০ শয্যার বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এরমধ্যে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০০টি, প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচটি করে মোট ৩০টি ও সদর হাসপাতালে ১০টি শয্যা রয়েছে। এছাড়াও আইসিইউ রয়েছে ১২টি।
Advertisement
জেলায় গত ২৬ এপ্রিল প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। শুরুর দিকে সংক্রমণের সংখ্যা কম থাকলেও ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে।
জেলায় সর্বমোট করোনা রোগীর সংখ্যা এক হাজার ২৩৩ জন। এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ১৪৫ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৩৭ জনের।
অপরদিকে এই ভাইরাসের উপসর্গে মৃত্যুবরণ করেছেন ১৯৫ জন। বর্তমানে ৪১ জন রোগী এ ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এদিকে জেলায় টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ৮১ হাজার ৬৭১ জন আর দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১০ হাজার ১০২ জন।
Advertisement
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. রুহুল কুদ্দস জাগো নিউজকে জানান, করোনা রোগীদের জন্য ১০০ শয্যার বেড প্রস্তুত রয়েছে। এখানে ৪১ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, এখানে ১২টি আইসিইউ রয়েছে। সেখানে আটজন রোগী ভর্তি রয়েছেন। রোগীর চাপ বৃদ্ধি পেলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার উদ্যোগ নেব।
সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফাওয়াত জাগো নিউজকে জানান, সারাদেশের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন উপজেলার সঙ্গে আন্তঃযোগাযোগের কারণে এখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এ অবস্থা বিদ্যমান থাকলে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হবে আমাদের।
তিনি আরও জানান, জেলায় করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়ি লকডাউন স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিরা করলেও তার ফলোআপ না থাকায় সংক্রমণ বাড়ছে। এখনই দরকার এ বিষয়ে তদারকি করা। নাহলে জেলার হাজার হাজার মানুষ করোনা সংক্রমিত হবে।
জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আলিনুর খান বাবুল জাগো নিউজকে বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সাতক্ষীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। সামনে সাতক্ষীরার জন্য কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে। সেজন্য দ্রুত আইসিইউ ও শয্যা সংখ্যা বাড়ানো জরুরি।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় যখন দেশের প্রশাসন ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঠিক তখন লকডাউন উপেক্ষা করে জেলায় প্রবেশ এখনও চলমান রেখেছে মানুষ। দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে রোগীর সংখ্যা। এছাড়া করোনা উপসর্গে আক্রান্ত ব্যক্তিরা জেলার মোড়ে মোড়ে, চায়ের দোকান, হাটবাজার, রাস্তাঘাটা ও বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাঘুরি করছেন। ফলে ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রমণ।
আহসানুর রহমান রাজীব/এসএমএম/জেআইএম