বিশেষ প্রতিবেদন

সরকারি দফতরের তথ্য হালনাগাদ নেই মাদারীপুর জেলা তথ্য বাতায়নে

মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন সরকারি দফতর-অধিদফতরের তথ্য নেই জাতীয় তথ্য বাতায়নে। ফলে ডিজিটাল সেবা  থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলার জনসাধারণ। এই তথ্য বাতায়ন অংশে ৮টি প্রধান লিংকসহ প্রায় ৪৫টি লিংক রয়েছে যার অধিকাংশই ওয়েবসাইট ডেভেলপ করার পর থেকে হালনাগাদ হয়নি। মাদারীপুর জেলা তথ্য বাতায়নের লিংক হচ্ছে (www.madaripur.gov.bd)। এই লিংক থেকে কৃষি ও খাদ্য বিষয়ক ৬টি, প্রকৌশল ও যোগাযোগ সংক্রান্ত ১০টি, আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিষয়ক ৫টি, মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষযক ৭টি, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক ৬টি, অন্যান্য অফিসসমূহে ৫টি, স্বাস্থ্য বিষয়ক ৩টি এবং আরও ৩টি বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। মাদারীপুর জেলা কারাগার, হাসপাতাল, শিল্পকলা, বিসিক, পৌরসভা, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এমকি শিক্ষা বিভাগসহ কোনো ওয়েবসাটই নিয়মিত আপডেট করছেন না সংশ্লিষ্টরা। তাই সরকারের ডিজিটাল কার্যক্রমের উদ্দেশ্য মাদারীপুরে ভেস্তে যেতে বসেছে। লিংকে তথ্য অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, বিভিন্ন অধিদফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম আছে, কিন্তু বাস্তবে তিনি সেখানে নেই। মাদারীপুর ক্রীড়া সংস্থার লিংকে দেখা যায়, জেলা প্রশাসক জিএসএম জাফর উল্লাহ ও পুলিশ সুপার মো. ফরিদুল ইসলামের নাম লেখা রয়েছে। কিন্ত ওই দুই কর্মকর্তার দুইজনই প্রায় তিন মাস আগে অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন। জাতীয় তথ্য বাতায়নে মাদারীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের আপডেট তথ্য নেই। এখানে শুধু পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের একটি ছবি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তথ্য বাতায়নে মাদারীপুর জেলা পৌরসভা লিংকে শুধু মাদারীপুর সদর পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ ও কাউন্সিলরদের ছবি ও তাদের সম্পর্কে সামান্য তথ্য রয়েছে। তবে হালনাগাদ নেই। এই তথ্য বাতায়নে মাদারীপুর শিক্ষা অফিসের একটি ছবি ছাড়া আর কোনো তথ্য নেই। ঠিক একইভাবে তালিকায় ৪৫টি লিংক থাকলেও তথ্যের ঘাটতি আছে প্রত্যেকটি লিংকে। বেশির ভাগ ক্ষেক্রেই শুধু ওই বিভাগের অফিসের একটি করে ছবি শোভা পাচ্ছে। মাদারীপুর জজ কোর্টের সাবেক পিপি (নারী ও শিশু) অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ হাওলাদার বলেন, ই-সেবার মাধ্যমে জেলা প্রশাসনের রেকর্ড রুম থেকে জমির পর্চা সময় মতো পাওয়া যাচ্ছে না। ই-মেইেলের মাধ্যমে আবেদন করার পরও পর্চা পেতে মাসের পর মাস সময় লাগছে। বিশেষ করে পর্চা পেতে বিলম্ব হওয়ায় জমি-জমা সংক্রান্ত মামলার জট সৃষ্টি হচ্ছে আদালতে। তিনি আরও বলেন, শুধু ওয়েবসাইট তৈরি করলেই চলবে না সময় মতো তা হালনাগাদ না রাখলে জনসাধারণ ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হওয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের আইসিটি বিভাগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মাদারীপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পারভেজ রায়হান জাগো নিউজকে বলেন, তথ্য বাতায়নের যে সকল লিংক দেয়া রয়েছে তার দায়িত্বে থাকা প্রত্যেককে একটি করে পিসি দেয়া হয়েছে। তথ্য হালনাগাদ না করার কোনো কারণ নেই। এমনকি অফিসে ল্যাপটপ বা কম্পিউটার নেই একথা বলারও সুযোগ নেই। নিজ নিজ উদ্যোগে তাদের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন তথ্যাবলি তাদেরই হালনাগাদ করা উচিত। ওই সকল অফিস এখন ভিন্ন ভিন্ন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে। আমরা ইচ্ছা করলেও এখন তাদের ওয়েবসাইটে তথ্য অপলোড করতে পারব না। এক্ষেত্রে অবহেলার কোনো সুযোগ নেই। আমরা বিষয়টি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করি। এ ব্যাপারে তিনি (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক) তাৎক্ষণিক তার অফিস সহকারীকে প্রত্যেক দিন পাঁচটি করে ওয়েবসাইটের লিংক ভিজিট করে তথ্য হালনাগাদ আছে কিনা সে সম্পর্কে তাকে অবহিত করার নির্দেশ দেন।মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. কামাল উদ্দিন বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, জেলা পর্যায়ের যে কোনো সভা-সেমিনারে তথ্য বাতায়নের তথ্য হালনাগাদ করার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে থাকি। কিন্ত নিয়মিত হালনাগাদ না করার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠানের গাফলতি থাকলে তা অবশ্যই আমরা পর্যবেক্ষণ করবো। প্রত্যেক নাগরিক যাতে তথ্য বাতায়ন বা সিটিজেন চার্টারের মাধ্যমে সুবিধা গ্রহণ করতে পারে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার পরার্মশ প্রদান করেন তিনি। জেডএইচ/এসএস/এমএস

Advertisement