করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে আরও এক সপ্তাহের জন্য ‘কঠোর লকডাউন’ আরোপের সুপারিশ করেছে কোভিড ১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। প্রস্তাবিত এই লকডাউন শেষ হওয়ার আগে সংক্রমণের হার বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়ারও পরামর্শ দিয়েছে কমিটি।
Advertisement
রোববার (১৮ এপ্রিল) রাত ৮টায় জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৩১তম সভায় লকডাউন বাড়ানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়। ভার্চুয়াল এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ।
সোমবার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
ধীরে ধীরে লকডাউন তুলে নেয়ার পূর্ব পরিকল্পনা প্রস্তুত রাখারও পরামর্শ দিয়েছে কমিটি।
Advertisement
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। মার্চের শুরুতে এসে যা তীব্র আকার ধারণ করে। সংক্রমণ ঠেকাতে ৫ এপ্রিল থেকে প্রথম দফায় সাত দিনের জন্য ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ শুরু হয়। ১১ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এই বিধিনিষেধ চলে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত।
এরপর ১৪ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ ঘোষণা করে সরকার, যা চলবে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত।
কমিটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি কমপক্ষে দুই সপ্তাহের জন্য পূর্ণ লকডাউন সুপারিশ করেছিল। সরকার ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করায় কমিটি সন্তোষ প্রকাশ করে।
এতে আরও বলা হয়, ‘বৈজ্ঞানিকভাবে দুই সপ্তাহের কম লকডাউনে কার্যকর ফলাফল আশা করা যায় না।’
Advertisement
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চালু রাখার বিষয়ে কমিটি বলে, ‘দেশের অর্থনীতি সচল রাখার স্বার্থে শিল্প-কলকারখানা খোলা রাখার বিষয়টি কমিটি উপলব্ধি করে। তবে, বেসরকারি দফতর, ব্যাংক খোলা রাখা, ক্রমবর্ধমানভাবে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল, ইফতার বাজারে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত ভিড় লকডাউনের সাফল্যকে অনিশ্চিত করে।’
সে কারণে লকডাউনের সময় স্বাস্থ্যসেবা, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছে কমিটি। খোলা রাখা যাবে এমন জরুরি সেবার তালিকা প্রকাশেরও অনুরোধ জানিয়েছে কমিটি।
এর ব্যতয় ঘটলে বিরূপ পরিস্থিতির আশংকা প্রকাশ করে কমিটি বলেছে, ‘চলমান লকডাউনে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের চলাচলে বাধা ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটনা ঘটেছে।’
এছাড়া, আবারও উন্মুক্ত স্থানে কাঁচাবাজার বসানোর প্রস্তাব দিয়েছে কোভিড ১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটি।
রোববার করোনাভাইরাসে দেশে সবচেয়ে বেশি ১০২ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ পর্যন্ত এটিই ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা। দেশে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সাত লাখ ১৮ হাজার ৯৫০ জন। গত ৪ এপ্রিল দৈনিক সর্বোচ্চ সাত হাজার ৬২৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
এসএস/জেআইএম