দীর্ঘ ৪০০ দিন পর অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মধ্যে বিনা বাধায় অর্থাৎ কোয়ারেন্টাইনমুক্ত বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বহু প্রতীক্ষিত ‘ট্রাভেল বাবল’ চালু হওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করেছেন ভ্রমণকারীরা। কোনো বাধা ছাড়াই দীর্ঘদিন পর পরিবারের কাছে যেতে পারার আনন্দে বিমান বন্দরে আবেঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এদিন যাত্রীদের অনেককে আনন্দে কাঁদতে দেখা যায়।
Advertisement
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি এয়ারপোর্টে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন ৬৩ বছরের ডেনিস ও’ডনোঘুয়ে। তিনি বলেন, ‘চিৎকার করবো, কান্না করবো, জড়িয়ে ধরবো, সব আবেগ একসঙ্গে কাজ করছে।’
আল জাজিরা জানায়, এই আয়োজনের অর্থ হলো যাত্রীরা এখন কোয়ারেন্টাইনের বাধ্যবাধকতা ছাড়াই তিন ঘণ্টার ফ্লাইটে তাসমান সমুদ্র পাড়ি দিতে পারবেন। এ উপলক্ষে অনেক যাত্রীকে বিমানবন্দরে ভিড় করতে দেখা গেছে। টেলিভিশনের পর্দায় ভেসে উঠেছে তাদের মধ্যে বিরাজ করা আনন্দ, আবেগঘন পরিবেশ।
অস্ট্রেলিয়ার পতাকাবাহী কান্তাস এয়ারওয়েজের প্রধান নির্বাহী অ্যালান জয়সি সোমবার (১৯ এপ্রিল) বলেন, ‘৪০০ দিন পর কোয়ারেন্টাইন ছাড়াই যাত্রীরা ভ্রমণ করতে পারছেন। আমরা দিনে ১৬টি করে ফিরতি ফ্লাইট পরিচালনা করছি এবং সবগুলো যাত্রীতে পূর্ণ।’
Advertisement
তিনি জানান, ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়িয়ে সপ্তাহে ২০০টি করা হবে। যেখানে এয়ার নিউজিল্যান্ড জানিয়েছে, সোমবার তারা তাদের ফ্লাইট সংখ্যা চারগুণ করেছে এবং প্রতিটি ফ্লাইট ৯৭ শতাংশ যাত্রী পরিবহন করেছে।
দুই দেশের মধ্যে বাধামুক্ত ভ্রমণ শুরু হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন। তিকনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোয়ারেন্টাইনমুক্ত ভ্রমণ শুরু করতে পারা সত্যিই আনন্দের। পরিবারের কাছে ফেরা, বন্ধু-বান্ধব বা ছুটি কাটাতে আসা যেই হোক না কেন, নিউজিল্যান্ডে আপনাদের স্বাগত।’
জানা গেছে, করোনা মহামারি শুরুর আগে অস্ট্রেলিয়া ছিল নিউজিল্যান্ডের পর্যটনের বড় উৎস। ২০১৯ সালে তাদের মোট পর্যটকের ৪০ শতাংশ ছিল অস্ট্রেলিয়া থেকে, সংখ্যায় যা প্রায় ১৫ লাখ।
এছাড়া নিউজিল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ অস্ট্রেলিয়ায় বাস করেন যা প্রায় দুই কোটি ৬০ লাখ অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যার দুই শতাংশ।
Advertisement
দুই দেশের মধ্যে বহু যাত্রী প্রতিনিয়ত চলাচল করেন। এ অবস্থায় করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এক বছরের বেশি সময় ধরে দুই দেশের সীমানা বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়া অন্যান্য দেশ থেকে এই দুটি দেশে কেউ এলে তাদের নিজ খরচে দুই সপ্তাহের বাধ্যতামূলক হোটেল কোয়ারেন্টাইনে যেতে হয়।
এই পদক্ষেপের কারণে দুই দেশ অন্যান্য দেশের তুলনায় করোনা সংক্রমণও ব্যাপক নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। অস্ট্রেলিয়ায় এ পর্যন্ত ২৯ হাজার ৫০০ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আর করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৯১০ জনের। যেখানে নিউজিল্যান্ডে শনাক্ত হয়েছেন মাত্র দুই হাজার ২০০ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের।
ইএ/জেআইএম