দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন উপলক্ষে সরকার দলীয় সংগঠন আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের গুঞ্জন শোনা গেলেও দলটির পরবর্তী জাতীয় কাউন্সিল ছাড়া তা হচ্ছে না বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। ফলে গঠনতন্ত্র পরিবর্তন না করেই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যেতে হচ্ছে আওয়ামী লীগকে। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ জাগো নিউজকে বলেন, ‘দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হওয়ায় গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে। তবে আগামী কাউন্সিল ছাড়া গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত নেই।’ আসন্ন পৌর মেয়র নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে কোনো দিক নির্দেশনা না থাকায় আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের বিষয়টি সামনে আসে। ‘দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন হবে’ সরকার এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার পরপরই গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করতে হবে বলে মত দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী ফোরামের কেউ কেউ। পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে ওই সময় জাগো নিউজকেও জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা। কিন্তু বৃহস্পতিবার সংগঠনটির কার্যনিবার্হী কমিটির সভায় গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত না নিয়েই দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয় দলটির পক্ষ থেকে। সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, দলীয় প্রতীকে পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ঠিক করবেন দলের জেলা, উপজেলাসহ সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোর নেতৃবৃন্দ। পরে তা যাচাই করে কেন্দ্রীয় কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের পৌর মেয়র প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি, শহর বা পৌর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা স্থানীয় সাংসদদের পরামর্শ নিয়ে একজন প্রার্থী মনোনয়ন দেবেন।মনোনীত প্রার্থীর নাম এবং নির্বাচনী আইন, নীতিমালা ও বিধিমালা অনুযায়ী তার সব তথ্য ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে পাঠাতে হবে। এরপর স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মনোনয়ন দিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি স্থানীয় সরকার/পৌর মেয়র মনোনয়ন বোর্ড মেয়র প্রার্থীর নাম ও প্রতীক বরাদ্দ করবে।আর এক্ষেত্রে তৃণমূলের সিদ্ধান্তকেই অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তবে তৃণমূল একক প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হলে সেই ক্ষেত্রে একাধিক প্রার্থীর নামও পাঠাতে পারবে বলে দলীয় সূত্রটি উল্লেখ করে।দলের এমন সিদ্ধান্ত হওয়ার পর আপাতত গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের প্রয়োজন মনে করছে না দলটি। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, সরকার দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পরপরই আমাদের দলের গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের বিষয়টি সামনে আসে। কারণ এই নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নেয়ার ব্যাপারে গঠনতন্ত্রে কিছু বলা নেই। সুতরাং গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের বিষয়টি যুক্তিসঙ্গত। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। এর গঠনতন্ত্ররেরও বিশেষ ঐতিহ্য রয়েছে। চাইলেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে এর পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। জাতীয় কাউন্সিলের মধ্য দিয়েই সাধারণত গঠনতন্ত্র পরিবর্তন হয়। সুতরাং সংগঠনের আগামী জাতীয় কাউন্সিলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। উল্লেখ্য, ২৩৬ পৌরসভার নির্বাচন আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যেই পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।এএসএস/এআরএস/এমএস
Advertisement