দেশজুড়ে

ইফতারের দোকানে নেই ক্রেতা, বিপাকে হোটেল ব্যবসায়ীরা

রমজান এলেই রাজশাহী নগরীরর পথে-ঘাটে, হোটেল-রেস্তোরাঁয় দেখা মেলে বাহারি সব ইফতারের পসরা। গেল বছর করোনা পরিস্থিতিতেও অল্প পরিসরে জমে উঠেছিল ইফতার বাজার। কিন্তু এবার দৃশ্যপট কিছুটা ভিন্ন। করোনার ঊর্ধ্বমুখী রোধে সরকারঘোষিত লকডাউনে নগরীতে ইফতারের গুটিকয়েক দোকান বসলেও নেই ক্রেতা। এতে বিপাকে পড়েছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

রোববার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে নগরীর লক্ষ্মীপুর, সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, নিউমার্কেট, শিরোইল কাঁচাবাজার ও আলুপট্টির আশপাশের বিভিন্ন হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ঘুরে দেখা গেছে, গেল বছরের চেয়ে এবার ইফতার বেচাকেনায় পড়েছে ভাটা। বিকেল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেখানে ক্রেতাদের আনাগোনা ও উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যেত। সেই আমেজ আর চোখে পড়েনি। মানুষ কিনতে আসতে চাইলেও পুলিশি বাধায় তা ভেস্তে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন একাধিক হোটেল ব্যবসায়ী।

নগরীর লক্ষ্মীপুরে জনপ্রিয় হোটেলের মধ্যে তৃপ্তি হোটেলের সবার প্রথমে। এই হোটেলে রয়েছে কয়েকজন মালিক তার মধ্যে মো. রুবেল একজন। তিনি বলেন, লকডাউন হওয়ার পর থেকে ব্যবসা ১০০ ভাগের মধ্যে ১০ ভাগে নেমে এসেছে। ব্যবসা একেবারেই নাই। ১৫-২০ জন কর্মচারী কাজ করে হোটেলে। তাদের খরচই উঠছে না। তারপরও রামেক হাসপাতাল ও আশপাশের প্রাইভেট মেডিকেল এবং ক্লিনিকগুলোর জন্য হোটেলের অস্তিত্ব টিকে আছে। নাহলে এতদিন ব্যবসা গুটিয়ে নিতো হতো।

লক্ষ্মীপুরে ইফতার কিনতে এসেছেন ইউসুফ আহমেদ বাবু। তিনি বলেন, ‘প্রথম কয়েকটি রোজায় কঠোর লকডাউনের কথা চিন্তা করে বাইরে ইফতার করতে বের হইনি। মা অসুস্থ, এরপও নিজে কষ্ট করে বাসায় খিচুড়ি রান্না করে ইফতার সেরেছি। প্রতিদিনই একই ইফতার তো আর করা যায় না। তাই আজ বের হলাম কিছু কেনার জন্য।’

Advertisement

সাহেব বাজারের রহমানিয়া, মেমোরি বিরিয়ানি হাউস, শামীম সুইটস, চিলিস, দি ইটারী রেস্টুরেন্টে সীমিত পরিসরে ইফতারির পসরা নিয়ে ক্রেতাদের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে হোটেল মালিক ও কর্মচারীদের। কিন্তু সেখানেও তেমন চোখে পড়েনি ক্রেতাদের। এতে অনেকটায় হতাশ হোটেল মালিকরা।

সাহেব বাজারের শামীম সুইটসের মালিক আলমগীর কবির জানান, এবার রমজানে তাদের তেমন বেচাকেনা নেই। শুধুমাত্র দুপুর ২টা থেকে ৭টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইফতার বিক্রি করা হচ্ছে। এরপরও তেমন বেচাকেনা নেই।

কারণ হিসেবে তিনি জানান, লকডাউনে বাজার বন্ধ। লোকজনও শহর ছেড়েছে। আবার বাড়ি থেকে বের হতেও পারছে না সাধারণ মানুষ। তাই ব্যবসাও তেমন নেই।

নগরীর ভাটাপাড়া কাদের মন্ডলের মোড়ের হোটেল ব্যবসায়ী শরিফুল বলেন, সীমিত পরিসরে ইফতার নিয়ে দোকান খুলছি। অনেক কর্মচারীকে এই লকডাউনে বাদ দিয়েছি। দোকানভাড়া ও কর্মচারী বেতন দিতেই হিমশিম খাচ্ছি। তার ওপর রমজানে নেই কাঙ্ক্ষিত বেচাকেনা। সামান্য ভিড় দেখলেই পুলিশ মাইকিং করায় ক্রেতারা ভয়ে চলে যাচ্ছে, তাই ব্যবসাও নেই তেমন।

Advertisement

কতটা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন ক্রেতারা এ বিষয়ে জানতে চাইলে একাধিক হোটেল মালিক বলেন, আমরা স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন। গ্লাভস, মাস্ক, টুপি পরে ইফতার বিক্রি করছি। যারা ক্রেতা আছেন তাদেরকেও যতটা সম্ভব সতর্ক করছি। তারাও যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইফতার কেনেন।

ফয়সাল আহমেদ/এসজে/জেআইএম