দেশজুড়ে

হাসপাতাল ঘুরে রোগীর স্বজনদের সাহরি বিতরণ

সাহরি আর ব্যাগ হাতে হাসপাতালের ভবনের প্রতিটি ওয়ার্ডে ঘুরছে একদল যুবক। উদ্দেশ্য রোগীর সঙ্গে থাকা স্বজনদের মাঝে সাহরি বিতরণ করা। করোনা পরিস্থিতিতে বাসায় রান্না করা খাবার বক্সে এনে দেয়া হচ্ছে তাদের। রাত ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত চলে তাদের এ কার্যক্রম।

Advertisement

রোববার (১৮ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।

যুবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সদস্যদের টাকায় কেনা হয় বাজার। এরপর ঘরেই রান্না করা হয়। সাদামাটা আয়োজনে থাকে খিচুড়ি, কোনো দিন আবার সাদা ভাত, ডাল আর মুরগির সাংস। সঙ্গে বোতলজাত খাবার পানি। এরপর অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে যান সাহরি বিতরণে।

মহেমপুর উপজেলা থেকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ছেলেকে নিয়ে ভর্তি হয়েছেন মা রেহানা আক্তার। সাহরিতে কী খাবেন তা জানতেন না। কিন্তু যুবকদের এনে দেয়া খাবার পেয়ে তিনি খুশি।

Advertisement

রেহানা আক্তার বলেন, ‘সাহরি নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু দেখি কয়েকজন ছেলে এসে আমাকে এক বক্স খাবার দিয়ে বলে রাতের সাহরিটা আপনার জন্য।’

আরেক রোগীর স্বজন জানান, রাতে তার খাবার নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তাদের দেয়া সাহরি পেয়ে তিনি খুশি। এটা খেয়ে রোজা রাখবেন।

সাহরি বিতরণের উদ্যোক্তা বিশিষ্ট নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠক শামীম আহম্মেদ টফি জানান, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীরা নিয়মিত খাবার পেলেও সঙ্গে থাকা স্বজনদের বাইরে থেকে নিয়ে আসতে হয়। বিশেষ করে গরমের সময় রাতে এনে রাখা খাবার সাহরির আগেই নষ্ট হয়ে যায়। এতে রোগীর স্বজনরা খেতে পারেন না। বেশিরভাগ সময় সাহরি না খেয়েই রোজা রাখেন। সেই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে গত বছরের মতো এবারও সাহরি বিতরণ করা হচ্ছে। এ কর্মসূচির সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশনায় শহরের সব হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকে। দূর-দূরান্তের রোগীর স্বজনরা সাহরি খেতে পারেন না। তাই রোজার সময় তাদের সাধ্যমতো সাহরি বিতরণ করছেন।

তিনি আরও জানান, এ কাজে তাদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আছেন মো. আব্দুর রহিম, মহিদুল ইসলাম, জুবায়ের, ওমায়ের বাবু, সাজ্জাদ হোসেন, হাসান, মাসুদ বিশ্বাস ও নুরমোহাম্মদসহ আরও কয়েকজন তরুণ।

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এমন উদ্যোগের কথা শুনে খুবই ভালো লাগছে। এই মহৎ কাজের মাধ্যমে আয়োজকরা আল্লাহর রহমত পাবেন বলে মনে করি।’

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এসজে/এমকেএইচ