দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। সেইসঙ্গে বাড়ছে কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের মৃত্যুর মিছিল। গত ১৬ এপ্রিল রাজধানীর ইমপালস হাসপাতালে মারা যান কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত সাংবাদিক রিফাত সুলতানা। মৃত্যুর আগে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করা রিফাত সুলতানা সদ্যজাত সন্তানের মুখ পর্যন্তও দেখতে পারেননি।
Advertisement
মহামারির শুরু থেকেই অনেক গর্ভবতী নারীই কোভিডে-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও অনেক ক্ষেত্রে মায়েরা সুস্থ সন্তান জন্ম দিয়েছেন এবং মায়েরাও সুস্থ হয়েছেন।
গর্ভবতী নারীর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই চিকিৎসকরা হবু মায়েদের এ সময় সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
করোনার এ আবহে গর্ভাবতী নারীর জন্য প্রয়োজন বিশেষ সুরক্ষা। বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভবতী নারীদের করোনাভাইরাসের প্রকোপে পড়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। কারণ এ সময় নারীর শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে।
Advertisement
ফলে গর্ভবতী নারী শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন। তার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। কাজেই কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে।
করোনাভাইরাস যেহেতু একটি সংক্রামক রোগ; তাই এখন গর্ভবতী নারীদের উচিত খুব বেশি সাবধানে থাকা এবং নানা সতর্কতা অবলম্বন করা। যত্নে থাকার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবারের উপরেও বিশেষ নজর দিতে বলা হয়।
এ ছাড়াও নিজেদের জীবনযাত্রায়ও বেশ কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি। জেনে নিন করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে গর্ভবতী নারীদের যেসব সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত-
>> অতিরিক্ত তেলমশলাযুক্ত খাবার, চাইনিজ খাবার, ফাস্ট ফুড ও জাঙ্ক ফুড, বাইরের খাবার, প্রসেসড ফুড বা কাঁচা খাবার খাওয়া উচিত নয় এ সময়।
Advertisement
>> আপনি যদি কর্মজীবী হয়ে থাকেন; তাহলে অবশ্যই এখন থেকেই হোম অফিস করুন।
>> এই মুহূর্তে শুধু দেশের অবস্থা খুব খারাপ, কাজেই সম্ভব হলে গর্ভবতী মহিলাদের এমন কোথাও যাওয়া উচিত নয় যেখানে অনেক মানুষের ভিড়।
>> যদিও দেশে লকডাউন চলছে, তবুও অনেকেই প্রয়োজনে বাইরে বেরচ্ছে হন। তবে গর্ভবতী নারীদের এ সময়ে একেবারেই বাড়ির বাইরে যাওয়া চলবে না।
>> যদি আপনাকে বাইরে বের হতেই হয়; তাহলে মাস্ক না পরে বের হবেন না।
>> ঘরে থাকলেও সবসময় হাত ধুতে হবে বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন।
>> দরজার হাতল, লিফটের বোতাম, বাজারের থলি, বাথরুমের ফ্লাস ইত্যাদি ধরার পরেও হাত স্যানিটাইজ করতে ভুলবেন না।
>> পরিবারের কেউ যদি সর্দি-কাশিতে ভুগে থাকেন, তার সংস্পর্শ এড়িয়ে চলবেন।
>> হাতের মোবাইল ফোনটিও পরিষ্কার রাখুন। হাঁচি-কাশির সময় কাপড় ব্যবহার করুন।
মনে রাখবেন- এ সময় যদি আপনি জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট হওয়া, ক্লান্তি, পেশী বা শরীরের ব্যথা, মাথা ব্যথা, স্বাদ বা গন্ধ টের না পাওয়া, গলা ব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া ইত্যাদি লক্ষণ প্রকাশ পায়; তবে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র: ইউসি হেলথ
জেএমএস/এমএস