দেশজুড়ে

ঝড়ে গুঁড়িয়ে গেল আশ্রয়ন প্রকল্পের পাকা ঘর

 

‘অনেক কষ্টে সরকারি পাকা ঘর পানুং (পাইলাম)। এমন বাতাস আসিল ঘরের টিন, বেড়া সব উড়ি নিয়া গেল। ঘরের সিমেন্ট খুলি খুলি পড়ছে। মোর ভ্যাগ্য ভ্যাল মোর কিছুই হয়নাই। এলা মুই কী করি এই ঘর ভ্যাল করিম।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন সরকারি ঘর পাওয়া উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছের জলঢাকা এলাকার হালিমা খাতুন (৩০)।

Advertisement

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছের জলঢাকা এলাকায় শনিবার (১৭ এপিল) ভোরে কালবৈশাখী ঝড়ের তোড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরের চাল উড়ে যায়, ভেঙে পড়ে তিনটি পিলার। ঘর হারিয়ে হালিমা খাতুন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

খবর পেয়ে শনিবার বিকেলে লালমনিরহাট সদর উপজেলা প্রকৌশলী শাহ ওবায়দুর রহমান ও ইউএনও অফিসের দুই কর্মচারী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগী আমিনুল ইসলাম (৪০) বলেন, ঘর ও জমি আমাদেরকে হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু রাস্তা ও নলকূপের ব্যবস্থা না থাকায় আমরা অনেক কষ্টে আছি।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘পাকা ঘর যদি ঝড়ে ভেঙে পড়ে তাহলে পরিবার নিয়া ক্যামনে থাকমো হামা।’

জানা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ১৫০টি ভূমিহীন পরিবারের কাছে ঘর ও জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে এবং আরও ১৫০টি ঘর নির্মাণ চলমান আছে। পাকা ঘর পেয়ে অনেক পরিবার বসবাস শুরু করে দিয়েছেন।

এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের এক কর্মচারী এখানে কাজের দেখাশুনা করেছিলেন এবং তার খুশিমতো কাজ শেষ করেছেন। নিম্নমানের কাজের কথা বললে আমাদের কথায় তিনি কোনো গুরুত্ব দেননি।

মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, বসবাস শুরুর আগেই বাতাসে ঘরের চাল উড়ে যাওয়া আর পিলার ভেঙে যাওয়ায় আমরা হতবাক।

Advertisement

তবে কাজের মান নিয়ে প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে তিনি জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের বিষয়টি সরাসরি ইউএনও স্যার নিয়ন্ত্রণ করেন।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উত্তম কুমার রায় বলেন, হালিমা খাতুনের ক্ষতিগ্রস্ত ঘরটি পুনরায় মেরামত করে দেওয়া হবে। ঘর নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি সঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেন।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্ত ঘরটি মেরামত করে দেয়া হবে। অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রবিউল হাসান/এফএ/এমএস