দেশজুড়ে

গ্রেফতার আতঙ্কে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা

মানিকগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা আছেন গ্রেফতার আতঙ্কে। মেয়র পদের তিন সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে দু`জনের নামেই নাশকতার মামলা হয়েছে। এতে আসামি করা হয়েছে বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থীসহ অর্ধশতাধিক দলীয় নেতা-কর্মীকে। সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী অ্যাড.আজাদ হোসেন খান তফসিল ঘোষণার দিন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। আত্মগোপনে আছেন আরেক প্রার্থী কাজী রায়হান উদ্দিন টুকু। বিএনপি নেতা-কর্মীদের অভিযোগ নির্বাচনী মাঠ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতেই সাজানো মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে তাদের। তবে পুলিশ বলছে মামলার সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই।দলীয় সূত্র জানায়, পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার অনেক আগে থেকেই ব্যাপক গণসংযোগ চালাচ্ছেন জেলা বিএনপির তিন নেতা। তারা হলেন, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আজাদ হোসেন খান, সাবেক যুবদল নেতা নাসির উদ্দিন আহম্মেদ যাদু ও সাবেক ছাত্রদল সভাপতি কাজী রায়হান উদ্দিন টুকু। কিন্তু হঠাৎ করেই গত ২৩ নভেম্বর মানিকগঞ্জ সদর থানায় দায়ের করা একটি নাশকতা  মামলায় বিএনপি প্রার্থীদের প্রচারণায় ছন্দপতন ঘটেছে।এই মামলায় আসামি করা হয়েছে আজাদ হোসেন খান ও কাজী রায়হান উদ্দিন টুকুসহ ৩৫ নেতা-কর্মীর নামে। অজ্ঞাতনামা আসামি আরও ৫০-৬০ জন।পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিন আজাদ হোসেন খানকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর গ্রেফতার হয়েছেন আরেক আসামি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী পরিষদ নেতা অ্যাড.মহিউদ্দিন স্বপন। এরপরই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মেয়র প্রার্থী রায়হান উদ্দিন টুকুসহ নেতা-কর্মীরা। নাশকতার মামলাটি দায়ের করেছেন মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রহমত আলী। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, গত ২৩ নভেম্বর জামায়াতের ডাকা হরতাল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানড়া এলাকায় আসামিরা গাড়ি ভাঙচুর, জনমনে ভীতি সৃষ্টিসহ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন। ওই রাতেই গ্রেফতার হন আজাদ হোসেন খান।আজাদ হোসেন খানের স্ত্রী সানজিদা রহমান জাগো নিউজকে জানান, মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেয়ার পর থেকে তার স্বামীকে হয়রানি করা হচ্ছে। মাস খানেক আগে পুরাতন একটি মামলায়ও তাকে গ্রেফতার কার হয়েছিলো। সেই মামলায় জামিনে এসে নির্বাচনের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। যে নাশকতার  মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে তা সাজানো বলে জানান তিনি।গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে থাকা আরেক সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী কাজী রায়হান উদ্দিন টুকু জাগো নিউজকে জানান, গত ১৫ দিনে মানিকগঞ্জে বিএনপির কোনো মিছিল মিটিং হয়নি। ২৩ তারিখ মহাসড়কের গাড়ি ভাঙচুরের যে ঘটনা পুলিশ বলছে তা কোনো সাংবাদিকও জানেন না। তিনি দাবি করে পুরো ঘটনাটিই পুলিশের সাজানো। বিএনপিকে নির্বাচনী মাঠ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতেই এই মামলা দেয়া হয়েছে।বিএনপির অপর সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী নাসির উদ্দিন আহম্মেদ যাদু জাগো নিউজকে জানান, প্রচারণা চালাতে গিয়ে সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকি। কখন যেন পুলিশ এসে হানা দেয়। গ্রেফতারের ভয়ে নেতা-কর্মীরা প্রচারণায় অংশ নিতে চান না। তিনি বলেন, বিএনপিকে মানুষ ভোট দেয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ থাকবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এছাড়া সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী শরীফ ফেরদৌস, তুহিন ও জিন্নাহ জানান, মামলা হওয়ার পর থেকে তারা পালিয়ে আছেন। এলাকায় যেতে পারেন না গ্রেফতারের ভয়ে। অভিযোগ করেন প্রায় প্রতিদিনই পুলিশ তাদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ সম্ভব নয় বলে জানান তারা।নাশকতার মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার সঙ্গে পৌর নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই।বি.এম খোরশেদ/এমজেড/এমএস

Advertisement