সর্বাত্মক লকডাউনে নির্দেশিত বিধিনিষেধ তদারকিতে বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীতে ১০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের পাশাপাশি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসব ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেন।
Advertisement
অভিযানে সরকারি বিধিনিষেধ ভঙ্গ, স্বাস্থ্যবিধি না মানা এবং অনুমোদনবিহীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় ১১টি মামলা করা হয়েছে।
এর মধ্যে আঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরিনা নাজনিন বেইলী রোড, মগবাজার, হাতিরপুল ও নিউ মার্কেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে দুপুর ৩টার পর যেসব দোকানপাট, কাচাবাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল সেগুলো বন্ধ করা হয়। হাতিরপুল ও নিউমার্কেট কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীদেরকে সাময়িকভাবে বাজারের বাইরে রাস্তার একাংশে বসে পণ্য বিক্রিতে উৎসাহিত করেন।
অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সুয়ে মেন জো'র তত্ত্বাবধানে শাহজাহানপুর বাজার, মতিঝিল কলোনী বাজার, শান্তিনগর বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় প্রায় ১৫০টি দোকান ও ব্যক্তিকে বিভিন্ন কারণে সতর্ক করা হয়।
Advertisement
অঞ্চল-৩ এ ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের পলাশী মোড় কাঁচাবাজার ও ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়িবাঁধ এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বাবর আলী মীর।
অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হায়দর আলী ৩২, ৩৪, ৪২ ও ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাবুবাজার, কাপ্তানবাজার, ধোলাইখাল, বাহাদুর শাহ পার্ক ও লালকুটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।
অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহীনুর আলম ৭ নং ওয়ার্ডের মানিকনগর বাজার ও ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের সূত্রাপুর বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন।
অঞ্চল -৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার ৭০নম্বর ওয়ার্ডের টুলটুলিয়া বাজার ও ধীতপুর বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তিনি সরকারি বিধিনিষেধ যথাযথভাবে পরিপালন না করায় প্রায় ৫০টি দোকানকে সতর্ক করেন।
Advertisement
অঞ্চল -১০ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন মিয়া ৫৮ নম্বর, ৬০ নম্বর ও ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের শ্যামপুর ও দনিয়া এলাকাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।
এছাড়াও ডিএসসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত খিলগাঁও এবং সিপাহীবাগ বাজারসহ অঞ্চল ২ এর অন্যান্য বাজার ও দোকানপাট পরিদর্শন করেন। এ সময় সরকারী বিধিনিষেধ ভঙ্গ করায় আদালত পাঁচটি মামলা দায়ের ও নগদ আট হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিলা কবীর ত্রপা অঞ্চল-৩ এর পলাশী বাজারসহ আরও করেন এবং সরকারি বিধিনিষেধ মেনে না চলায় ২টি মামলার মাধ্যমে এক হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করেন।কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ আজ অঞ্চল ০৫, ০৯ ও ১০ এর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ
আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় আদালত সরকারের আদেশ না মেনে দোকান খোলা রাখা, মাস্ক না পরে জনসমাগমস্থলে ঘুরে বেড়ানোর অপরাধে ০৪টি মামলা দায়ের করেন এবং ৫ হাজার ৯ শত টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন।
অভিযান প্রসঙ্গে করপোরশেনের সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামানের বলেন, ‘জনগণ স্বতস্ফূর্তভাবে এবারের লকডাউন দৃশ্যমানভাবে মেনে চলছে। তারপরও কিছু কিছু জায়গায় সরকারি বিধিনিষেধ না মানার প্রবণতা আমরা দেখেছি। সাধারণত আমরা জনগণকে জরিমানা করতে চাইতে চাই না। কিন্তু জাতির বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনায় এবারের লকডাউনে আমাদেরকে একটু কড়াকড়ি আরোপ করতেই হচ্ছে। সেই আলোকে আজ সরকারি বিধিনিষেধ ভঙ্গ করে দোকানপাট খোলা রাখায় পাঁচটি মামলা দায়ের ও তাদেরকে জরিমানা করেছি।’
এমএমএ/এসএস/এমকেএইচ