কাঁচামাল ব্যবসায়ী শিমুল ইসলাম। বাড়ি মাগুরায়। এলাকা থেকে কাঁচামাল নিয়ে এসে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বিক্রি করে ফিরে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু শাহবাগ মোড় পার হতে গিয়ে দেখেন, র্যাব অভিযান চালাচ্ছে। এই দেখে ভয়ে মাস্কের বদলে মুখে গামছা দিয়ে দ্রুত চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন শিমুল। কিন্তু নজর এড়াতে পারেননি র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের, তাকে জরিমানা গুনতে হয়েছে ৩০০ টাকা।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে র্যাব-৩ এর সহযোগিতায় এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।
শিমুল ইসলাম জাগো নিজকে বলেন, ‘রাতে কাঁচামাল নিয়ে মাগুরা থেকে যাত্রাবাড়ী এসেছিলাম। বিক্রি করে আবার মাগুরা ফিরে যেতে যাত্রাবাড়ী থেকে রিকশা নিয়ে গাবতলীর উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলাম। শাহবাগ মোড়ে আমি র্যাব দেখে ভয়ে মুখে গামছা দিই। মাস্কও ছিল, কিন্তু মুখে না। মাস্কটি ছিল রিকশার হুডির সঙ্গে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই লকডাউনের মধ্যে অনেক কষ্ট করে ঢাকায় এসেছিলাম। এরপরও র্যাব আমাকে ৩০০ টাকা জরিমানা করলো!’
Advertisement
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু জাগো নিউজকে বলেন, ‘অনেক দূর থেকেই রিকশাটি লক্ষ্য করছিলাম। রিকশায় বসা একজন মাস্ক পরেনি। পরে আমাদের চেকপোস্টের কাছাকাছি এসে মাস্ক পরেন লোকটি। মাস্ক থেকেও না পরার কারণে এবং সরকারি বিধি না মানার কারণে তাকে ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়।’
শাহবাগ থেকে হাতিরপুলের দিকে রিকশায় যাচ্ছিলেন বাংলাদেশ কাস্টমসের কর্মকর্তা মানু মণ্ডল। গলায় বাংলাদেশ কাস্টমসের আইডি কার্ড ঝুলানো। ম্যাজিস্ট্রেট জিজ্ঞেস করলেন, ‘কাস্টমস অফিস কি খোলা? আপনি কোথায় যাচ্ছেন? মাস্ক খুলে ফোনে কথা বলেছেন কেন?’ কর্মকর্তা কোনো কথা বললেন না। বললেন, ‘আমার ভুল হয়েছে।’ পরে ওই কর্মকর্তাকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
পলাশ কুমার বসু বলেন, ‘জনগণ এখনও সচেতন হচ্ছে না। আমরা সচেতন করার চেষ্টা করছি। করোনাকালীন সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারের নির্দেশনায় লকডাউন চলছে। এটা বাস্তবায়নের জন্য আমরা মাঠে রয়েছি। এখন পর্যন্ত অনেককেই জরিমানা করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নিদের্শনা অনুযায়ী যারা আদেশ অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। যারা বিনা কারণে বাইরে ঘোরাঘুরি করবেন, মুভমেন্ট পাস না নিয়ে বাইরে বের হবেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মানবেন না তাদের জরিমানা করাও হচ্ছে। জরিমানার পাশাপাশি জনগণকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না আসার জন্য এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জরিমানা করা র্যাবের উদ্দেশ্য নয়। র্যাবের উদ্দেশ্য, করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা এবং সরকারের সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন মানতে সচেতনতা তৈরি করা।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘বেলা ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত টানা অভিযানে ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। জরিমানা করা হয় ৭ হাজার টাকা। এ সময় রিকশাওয়ালা ও দরিদ্রদের মাঝে মাস্ক ওই হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করে র্যাব।’
টিটি/এমএসএইচ/এমকেএইচ