করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান আটদিনের লকডাউনের দ্বিতীয় দিন চলছে। যাত্রাবাড়ীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করছে পণ্যবাহী ও ব্যক্তিগত গাড়ি। পণ্যবাহী যান অনেকটাই নির্বিঘ্নে চলাচল করলেও চেকপোস্টে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেকের মুখে পড়তে হচ্ছে ব্যক্তিগত গাড়িগুলোকে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত যাত্রাবাড়ীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
এই আট লেনের মহাসড়ক এখন অনেকটাই সুনসান। গাড়ির যান্ত্রিক কোলাহল কম। ঢাকা থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডের ওভারব্রিজ থেকে সামান্য পূর্বে সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। এখানেই পুলিশ প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসগুলোকে থামাচ্ছিল। থামিয়ে পাস কিংবা পরিচয়পত্র পরীক্ষা করছিলেন। রিকশা আসলে তাও থামিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন পুলিশের সদস্যরা।
চেকপোস্টে অবস্থান করছিলেন ডেমরা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি-প্যাট্রল) এ এস এম আজাদ। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘লকডাউনের মধ্যে যেসব গাড়ির চলাচলের অনুমতি নেই সেগুলোকে আমরা ফিরিয়ে দিচ্ছি কিংবা ট্রাফিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি। যতদিন লকডাউন থাকবে ততদিন এই ব্যবস্থা থাকবে।’
Advertisement
রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডে গুলিস্তানের দিকে যেতে অনেককেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। কয়েকজন যাত্রী জানান, তারা ব্যাংকে চাকরি করেন। কিন্তু অফিস থেকে কোনো যানবাহনের ব্যবস্থা ব্যবস্থা করা হয়নি, তাই কোনো না কোনোভাবে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তারা।
তবে মহাসড়কের পাশের ফলের দোকানগুলো যথারীতি খোলা পাওয়া গেছে। সেখানে তরমজু, আপেল, বাঙ্গি, আঙ্গুরসহ বিভিন্ন ধরনের ফল বিক্রি করা হচ্ছে। তবে ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। বিক্রেতারা জানান, বিকেলে ক্রেতায় পূর্ণ হয়ে যায়, গতকাল তাই হয়েছিল।
রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ড থেকে মাতুয়াইল খানবাড়ি মোড় হয়ে কবরস্থানে যাওয়ার সড়কটির বেশিরভাগ অংশ কাঠ দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে। উত্তর রায়েরবাগ কাঁচা বাজারটি সকালেই ছিল ক্রেতায় সরগরম।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গতকাল বুধবার (১৪ এপ্রিল) ভোর ছয়টা থেকে আটদিনের কঠোর লকডাউন (বিধি-নিষেধ) শুরু হয়েছে। আগামী ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ বহাল থাকবে।
Advertisement
লকডাউন ঘোষণা করে গত সোমবার (১২ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। লকডাউনের মধ্যে পালনের জন্য ১৩টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
লকডাউনের আটদিন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে গণপরিবহন। তবে জরুরি সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠান-সংস্থা খোলা রয়েছে। খোলা রয়েছে শিল্প-কারখানা। সীমিত পরিসরে দেয়া হচ্ছে ব্যাংকিং সেবা।
এই সময়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া যাবে না। খোলা স্থানে কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনা-বেচা করা যাবে ছয় ঘণ্টা।
আরএমএম/এমআরআর/জিকেএস