করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশজুড়ে কঠোর লকডাউন চলায় মানুষ ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে। আজ রোজার প্রধম দিনে ক্রেতারা খুব বেশি বাইরে বের হতে পারছেন না। এ কারণে রাজধানীর মিরপুরের ইফতার সামগ্রীর দোকানগুলোতে প্রায় ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ ইফতার সামগ্রী বানানো বন্ধ করে দেয়ার চিন্তা করছেন।
Advertisement
বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, হরেক রকম ইফতার সামগ্রী বানিয়ে দোকানে সাজিয়ে রাখলেও এবার ক্রেতা মিলছে না। প্রতিবছর যেখানে রোজার দিন বিকেল ৪টা থেকে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় তৈরি হয়, সেখানে ইফতারের এক ঘণ্টা আগে দুই-একজন ক্রেতা লক্ষ করা গেছে।
ইফতার সামগ্রী বিক্রি না হওয়ায় অনেক ব্যবসায়ীর মাথায় হাত। অনেকে আবার পরিস্থিতি বুঝে আইটেম ও পরিমাণে কম করে বানিয়ে বিক্রি করছেন। অলিগলিতে ছোট ছোট কিছু ইফতারির দোকান দেখা গেলেও সেসব দোকানেও তেমন ক্রেতা দেখা যায়নি।
মিরপুর-২ নম্বর পুলিশ ক্যাফে বড় আয়োজনে ইফতার বিক্রি হয়ে থাকে। অন্যান্য বছরের মতো এবারও সেখানে ইফতার বাজার বসালে ক্রেতা মিলছে না। হাতেগোনা দু-তিনজন ক্রেতা আসলেও অল্প পরিমাণে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। দোকানিরা পথচারী দেখলে তাদের দোকানে আনার চেষ্টা করছেন।
Advertisement
পুলিশ ক্যাফের ম্যানেজার খন্দকার আলম জাগো নিউজকে বলেন, বলার ভাষা নেই ভাই, ২০ জন কর্মচারী খাটিয়ে দুই লাখ টাকার ইফতারি বানানো হয়েছে। মনে হচ্ছে না এক লাখ টাকা বিক্রি করা সম্ভব হবে। এমন পরিস্থিতি হতে থাকলে ইফতার বাজার বন্ধ করে দিতে হবে।
মিরপুর-২ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে বিখ্যাত পূর্ণিমা হোটেলে রমজানে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার ইফতার সামগ্রী বিক্রি হয়ে থাকে। এ বছর ছোট পরিসরে আয়োজন করলেও পাঁচ হাজার টাকা বিক্রি হবে কি-না তা নিয়ে সন্দিহান হোটেলের মালিক তৌফিক।
তিনি বলেন, ইফতার বিক্রির এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে এমন পরিস্থিতি ধারণা করতে পারিনি। প্রতিদিন যেখানে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার ইফতারি বিক্রি করি সেখানে ১০ হাজার টাকা বিক্রি করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এই দোকানে ইফতার কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী মাহবুব জানান, হাসপাতালে রোগী দেখতে এসেছিলেন, সেখানে আত্মীয়র জন্য ইফতার কিনতে এসেছেন।
Advertisement
তিনি জানালেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাইরের খাবার খাওয়া একেবারেই বাদ দিয়েছেন। হাসপাতালে রোগী থাকায় বাধ্য হয়ে ইফতারি কিনতে এসেছেন।
মিরপুর-১০ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে প্রতিবছর ইফতারির বড় বাজার বসে থাকে। লকডাউনের কারণে এ বছর আল বারাকা হোটেলে শুধু ইফতারি বিক্রি করা হচ্ছে। হোটেল মালিক মো. জহিরুল হক বলেন, সাধারণত মিরপুর-১০ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের বিভিন্ন দোকানে ইফতারি বানিয়ে বিক্রি করা হতো। গত দুই বছর ধরে এ পরিস্থিতি বদলে গেছে।
তিনি বলেন, এই এলাকায় কেউ ইফতারি বিক্রি না করলেও তিনি অল্প পরিসরে আটটি ইফতারি আইটেম তৈরি করে বিক্রি করছেন। যতটুকু বিক্রি হবে না তা হোটেলের স্টাফদের মধ্যে বিতরণ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান।
এমএইচএম/বিএ/এমএস