ছাত্রীদের উত্ত্যক্তের কারণে সামাজিক শাস্তির জের ধরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের টাকাটুকিয়া গ্রামে নিরীহ এক সনাতন ধর্মাবলম্বীর বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে একদল বখাটে। হামলায় বৃদ্ধ ও নারীসহ অন্তত আটজন আহত হয়েছেন।
Advertisement
বুধবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের টাকাটুকিয়া গ্রামের দেবেন্দ্র বর্মণের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে তাহিরপুর থানা পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, টাকাটুকিয়া গ্রামের বর্মণ পাড়ার স্কুলপড়ুয়া ছাত্রীদের দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করতেন পার্শ্ববর্তী টুকেরগাঁও গ্রামের কাশেম মিয়া, লাইট মিয়া, মুসা মিয়া ও পাবেল মিয়া। এনিয়ে চার মাস আগে টাকাটুকিয়া গ্রামে জামালগড়, রসুলপুর ও টুকেরগাঁও গ্রামের গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে সালিশ বসে। ভবিষ্যতে এমন কাজ করবেন না বলে সালিশে অঙ্গীকার করেন অভিযুক্তরা।
তাদের কান ধরে উঠবস করানো হয়। ওই ঘটনার পরও নানাভাবে বর্মণ পাড়ার মেয়েদের বিরক্ত করতেন তারা। আগের বিচারে অপমানের জের ধরে বুধবার দুপুরে দেবেন্দ্র বর্মণের ছেলে সঞ্চিত বর্মনকে রাস্তায় এক পেয়ে মারধর করেন টুকেরগাঁও গ্রামের অভিযুক্তরা। তার চিৎকার শুনে পরিবারের লোকজন রক্ষা করতে গেলে তাদেরকেও মারধর করা হয়। এরপর টুকেরগাঁও গ্রামের ২০-২৫ জন টাকাটুকিয়া গ্রামের দেবেন্দ্র বর্মণের বাড়িতে হামলা চালান। তারা নারীদেরও মারপিট করেন। হামলায় আহতরা হলেন-দেবেন্দ্র বর্মন (৭০), তার ছেলে বাছিন্দ্র বর্মণ (৫০), সত্যেন্দ্র বর্মণ (৪৫), সঞ্চিত বর্মণ (৩০), বাছিন্দ্র বর্মণের স্ত্রী বিউটি বর্মণ (৪৫), ছেলে বাবলু বর্মণ (১৭), শিপলু বর্মণ (১৫) ও তাদের আত্মীয় দেবল বর্মণ (২২)।
হামলায় গুরুতর জখম হয়েছেন দেবেন্দ্র বর্মন, বাছিন্দ্র বর্মণ, বাবলু বর্মণ। তাদের তাৎক্ষণিক তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মির্জা রিয়াদ হাসান জানান, টাকাটুকিয়া গ্রামের তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাদের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
Advertisement
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ তরফদার জানান, এ ঘটনায় এখনও কেউ অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
লিপসন আহমেদ/এসআর/এমকেএইচ