দেশজুড়ে

খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত নওগাঁর গাছিরা

অবহেলায় বেড়ে উঠা খেজুর গাছের কদর বাড়ে শীতে। শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গে গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজে। শীতের ৪-৫ মাস খেজুরের রস সংগ্রহ করা যায় এবং তা থেকে তৈরি হয় সুমিষ্ট পাটালি ও লালী গুড়। শীতের সময় বাজারে খেজুরের গুড়ের চাহিদা একটু বেশি থাকে। প্রতি কেজি গুড়ের দাম প্রায় ১১০ টাকা।শীত মৌসুম জুড়ে গ্রামাঞ্চলে খেজুরের রস দিয়ে ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসবে নানান রকম পিঠা তৈরি করা হয়। ভাপা পিঠা, পুলি পিঠা, পাঠিসাপটা, রস পিঠাসহ বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরির ধুম পড়ে গেছে খেজুরের রস আর গুড় দিয়ে। রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা হাতে দা ও কোমরে দড়ি বেঁধে খেজুর গাছে উঠে চাছা-ছেলা করেন এবং ছেলা স্থানে নল বসান। সেই নল দিয়ে ফোটায় ফোটায় নেমে আসে সুস্বাদু খেজুর রস। রস সংগ্রহের জন্য গাছে গাছে মাটির হাড়ি বাঁধা হয়। ভোরের সূর্য ওঠার আগেই গাছিরা রস ভর্তি মাটির হাড়ি গাছ থেকে নামিয়ে এনে এক জায়গায় জড়ো করেন। পরে এই রস টিনের কড়াইয়ে জাল দিয়ে গুড় তৈরি করেন। এভাবেই ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা।প্রতি বছরের মতো এবারো নওগাঁ শহরের সমবায় অফিসের পাশে নাটোর থেকে আগত সাতজন গাছি খেুজর রস সংগ্রহ করছেন। নাটোরের মজিবর রহমান নামে এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে প্রত্যেকে মাসে ১০ হাজার টাকা বেতনে রস সংগ্রহ করছেন।নাটোরের লালপুর থানা থেকে আগত গাছি ইদ্রিস আলী জানান, কার্তিক মাস থেকে খেজুর গাছ চাছা-ছেলা শুরু হয়। প্রায় ৪/৫ মাস রস সংগ্রহ হয়। প্রতিদিন রস সংগ্রহ করে জাল দিয়ে গুড় তৈরি করেন। প্রতিদিন ১০-১২ কেজি করে রস পাওয়া যায়। তবে পৌষ মাসের দিকে বেশি গুড় পাওয়া যায়। প্রায় প্রতিদিন ২০-২৫ কেজি পর্যন্ত গুড় তৈরি হয়। এ গাছিরা প্রতিদিন প্রায় ৪৫টি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে থাকেন।গাছী কালাম জাগো নিউজকে জানান, পাখিরা যাতে রস না খেতে পারে সেজন্য জাল দিয়ে ঘিরে রাখতে হয়। একবার গাছ কাটার পর ২-৩ দিন রস পাওয়া যায়। রসের জন্য কাটা অংশ রোদে শুকিয়ে গাছকে ৪-৫ দিন বিশ্রাম দিতে হয়। এজন্য সাধারণত খেজুর গাছ পূর্ব ও পশ্চিম দিকে কাটা হয় যাতে সূর্যের আলো কাটা অংশে ভালোভাবে পড়তে পারে। তিনি শহরের উকিল পাড়া, ধোপা পাড়া, দূর্গাপুর, মাস্টার পাড়া দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৪০টি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন তারা।এছাড়া গাছি আসব ও জিয়া জাগো নিউজকে জানান, তারা মাসিক বেতনে খেজুর রস সংগ্রহের কাজ করেন। এ উপার্জন দিয়ে পরিবারের ভরণ-পোষণ করেন। পাশাপাশি অন্যান্য সময় কৃষি কাজও করে থাকেন। পেশাদার গাছির পাশাপাশি মৌসুমি গাছিরাও রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।এমজেড/পিআর

Advertisement