দেশজুড়ে

বরিশালে হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ, বেড না পেয়ে আকাশের নিচে রোগীরা

করোনা মহামারির মধ্যেই বরিশালে হঠাৎ করে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন নগরীর জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর চিকিৎসক ও সেবিকারা। অন্যদিকে রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় আইভি স্যালাইন সংকট দেখা দিয়েছে। রোগীর চাপ সামলাতে জেলা সদর হাসপাতালে শামিয়ানা টাঙিয়ে সেখানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

Advertisement

জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল জানান, ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় জেলা সদর হাসপাতালে শয্যা আছে মাত্র চারটি । এরমধ্যে দুটি পুরুষ ও দুটি নারী রোগীর জন্য। রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় আরও ১০টি শয্যা স্থাপন করা হয়েছে। এরপরও রোগীদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় ওয়ার্ডের বারান্দা, মেডিসিন ওয়ার্ড এমনকি সংলগ্ন খোলা আকাশের নিচেও রোগীরা আশ্রয় নিয়েছেন। এ কারণে জরুরি ভিত্তিতে মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) ডায়রিয়া ওয়ার্ড সংলগ্ন খোলা জায়গায় বাঁশ দিয়ে শামিয়ানা টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হাসপাতালে ৪০ জন নতুন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত ১২ দিনে ৫৪০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। ১ মার্চ থেকে গড়ে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এপ্রিল মাসের প্রথম ১০ দিন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত আড়াই শতাধিক শিশু চিকিৎসা নিয়েছে।

ডায়রিয়া ওয়ার্ডের নার্সিং ইনচার্জ আয়শা আক্তার জানান, হাসপাতাল থেকে রোগীদের আইভি স্যালাইন সরবরাহ করা হয়ে থাকে। তবে রোগীর চাপের কারণে হাসপাতালে আইভি স্যালাইনের মজুত শেষ হয়ে গেছে। রোগীর স্বজনরা বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে আনছেন।

Advertisement

এদিকে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা দেয়া হয় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও গত দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন প্রায় ২৫-৩০ শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে।

হঠাৎ করে গরম বেড়ে যাওয়ায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে বলে জানালেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন। তিনি জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগীর মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশই ডায়রিয়া রোগী। তবে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় কোনো ব্যাঘাত যাতে না ঘটে সেজন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

ডায়রিয়া রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় আইভি স্যালাইন সংকট দেখা দিয়েছে বলেও জানান জেলা সিভিল সার্জন। তিনি বলেন, স্যালাইন সরবরাহ চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।

সাইফ আমীন/এসআর/এমকেএইচ

Advertisement