দেশজুড়ে

বহুল প্রতীক্ষিত আইসিইউ বেড বরাদ্দ পেল চাঁদপুরবাসী

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) জন্য তিনটি বেড বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ফলে দীর্ঘদিনের চাহিদা পূরণের পথে চাঁদপুরবাসী।

Advertisement

বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে চাঁদপুরবাসী সরকারি জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসলেও এতদিন তার কোনো প্রতিফলন হয়নি। অবশেষে মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে কাঙ্ক্ষিত সেই সুখবরটি পেল চাঁদপুরবাসী।

এদিন চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের জন্য তিনটি আইসিইউ বেড, ১০টি অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর, পাঁচটি ন্যাজল কেনোলা ও ৫০০ টি পিপিই বরাদ্দ হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।

চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সহযোগিতায় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বেশ কয়েকবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই চিকিৎসা সামগ্রীগুলো বরাদ্দ আনতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানা গেছে। এরইমধ্যে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান মাহমুদ ডালিম ঢাকায় অবস্থান করছেন বরাদ্দকৃত চিকিৎসা সামগ্রী চাঁদপুরে নিয়ে আসার জন্য। খুব দ্রুতই সেগুলো এসে পৌঁছাবে।

Advertisement

এ নিয়ে চাঁদপুরের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও জেলা প্রশাসকসহ এই কাজে সংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।

অপরদিকে, কাঙ্ক্ষিত আইসিইউ বেড বরাদ্দে খুব বেশি খুশি না হয়ে এর সঠিক ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন সচেতন মহল। কেউ কেউ মনে করছেন, আইসিইউ সুবিধার জন্য প্রশিক্ষিত জনবল না থাকলে রোগীদের জন্য সমস্যা হতে পারে। তাই এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে সিভিল সার্জনকে দেখার আহ্বান জানান তারা।

একইসঙ্গে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চাঁদপুর সংক্রমণের দিক থেকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে দ্রুত আইসিইউ ইউনিট পরিচালনার জন্য বেড স্থাপন ও দক্ষ জনবলের ব্যবস্থা করা খুবই জরুরি মনে করেন তারা।

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ‘তিনটি বেড বরাদ্দ পেয়েছি। পুরো জেলার জন্য ন্যূনতম ১০টি বেডের প্রয়োজন ছিল। এরপরও আমরা তিনটি পেয়েছি। এতেই চাঁদপুরবাসী অনেক উপকৃত হবে বলে আমি মনে করি।’

Advertisement

তিনি আরও বলেন, ‘বরাদ্দকৃত চিকিৎসা সামগ্রী এসে পৌঁছার পরও রোগীদের আইসিইউ সেবা দিতে আনুমানিক এক মাস সময় লাগতে পারে। কারণ বেড বসানো, সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন ও জনবল প্রয়োজন। প্রশিক্ষিত জনবল ছাড়া আইসিইউর সঠিক সেবা দেয়া সম্ভব নয়।’

সিভিল সার্জন বলেন, ‘আইসিইউ পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে অতীতে যেমন রোগীদের ঢাকায় পাঠানো হতো, তা তুলনামূলক অনেক কমে যাবে।’

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, ‘আমি দায়িত্বভার গ্রহণ করার আগে থেকেই এই দাবিটি ছিল চাঁদপুরবাসীর। তখন থেকেই আমি স্বাস্থ্য অধিদফতর, স্বাস্থ্য সচিব, বিভাগীয় কমিশনারসহ প্রয়োজনীয় সব দফতরে আবেদন করছি। যদিও আমি পাঁচটি আইসিইউর বেডের আবেদন করেছিলাম। সেখানে আমাকে তিনটি দেয়া হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছে আমাকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব রোগীদের জন্য আইসিইউ সেবা চালু করার ব্যবস্থা করব। এ ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যেকোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হলে তা করা হবে। প্রশিক্ষিত জনবল দ্রুত সময়ের ভেতর ব্যবস্থা করার জন্য প্রয়োজনে আবেদন করব।’

নজরুল ইসলাম আতিক/এসজে/এমকেএইচ