করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে ৮ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। এতে অফিস বন্ধ থাকবে এমন ঘোষণার পর রাজধানী ছাড়ছে মানুষ। মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনালে ঘরমুখী মানুষের ভিড় দেখা গেলেও ঢাকার সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালের ফটক ছিল তালাবদ্ধ।
Advertisement
শত শত যাত্রীদের চলাচল, হকারদের হাঁকডাক, লঞ্চের হুইসেলের পরিবর্তে সদরঘাট এখন সুনসান অচেনা টার্মিনাল। পল্টুন ও টার্মিনাল ফাঁকা। সদরঘাটে শুধুই এখন বুড়িগঙ্গার কালো পানির ঢেউয়ের শব্দ। করোনা আতঙ্ক যেন গ্রাস করেছে সদরঘাট এলাকা।
মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা গেছে, সরকারঘোষিত প্রথম দফা বিধিনিষেধের পর থেকেই সদরঘাটে সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ। তবে অনেকে না জেনে ঘাটে যাচ্ছেন। কিন্তু মূল ফটক তালাবদ্ধ থাকায় ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন না। আশপাশের বিভিন্ন পকেট গেট ও দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে নদী পারাপারে উপায় খুঁজছেন। ট্রলার বা অন্য কোনো ব্যবস্থায় বাড়ি যাবেন বলে তারা জাগো নিউজকে জানিয়েছেন।
তবে লঞ্চ বন্ধ থাকলেও নদী পারাপারের জন্য কিছু নৌকা চালু আছে। দুই পারের মানুষ সেই নৌকা দিয়েই তপ্ত রোদের মধ্যে নদী পার হচ্ছেন। এজন্য কেউ কেউ ছাতা ব্যবহার করছেন। পুরান ঢাকার নবাবপুরের বাসিন্দা কয়েকজন যুবক চাঁদপুরের যাওয়ার উদ্দেশে সদরঘাটে গেলেও ভেতরে ঢুকতে পারেননি।
Advertisement
তারা জাগো নিউজকে বলেন, ‘কেউ কেউ বলছিলেন- লঞ্চ চলতে পারে। তাই এসেছি। এখন লঞ্চ না পেলে ট্রলার কিংবা যাত্রাবাড়ী থেকে প্রাইভেট গাড়িতে করে বাড়ি চলে যাব।’ তাদের মতো আরও বেশ কয়েকজনকে সদরঘাটে যেতে দেখা গেছে।
এদিকে করোনার সময়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া স্থানান্তর না হওয়ার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি। তিনি বলেন, ‘দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এসেছে। গতবারের চেয়ে সংক্রমণের হার একটু বেশি। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ স্থানান্তর হবেন না।’
নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে লঞ্চ, ফেরি ও স্টিমারসহ জলযান সুষ্ঠুভাবে চলাচল ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসংক্রান্ত বৈঠকে এ আহ্বান জানান।
তবে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে বাড়ি ফেরা মানুষের উপচেপড়া ভিড় তৈরি হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে চলমান লকডাউনের কারণে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, সিএনজিসহ নানা মাধ্যমে পাটুরিয়া ও আরিচাঘাট হয়ে মানুষ গ্রামের বাড়ি ফিরছেন। এ সুযোগে চড়া ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে।
Advertisement
অবৈধভাবে দূরপাল্লার রুটে যাত্রী বহনকারী এসব পরিবহন আটকে ট্রাফিক পুলিশকে মামলা দায়ের ও জরিমানা আদায় করতেও দেখা গেছে। একই অবস্থা মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালেও।
এইচএস/এএএইচ/এএসএম