‘কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার। আগামীকাল থেকে রমজান। পরিস্থিতি কী হবে কে জানে। তাই মাসের বাজার একসঙ্গে করে নিলাম। না কিনে উপায় নেই।’ রাজধানীর সিপাহীবাগ নোয়াখালী স্টোরে বেশ ভিড়ের মধ্যে পণ্য কিনতে আসা মহিউদ্দিন এভাবেই বলছিলেন কথাগুলো।
Advertisement
একদিকে কঠোর বিধিনিষেধের ঘোষণা, অন্যদিকে শুরু হচ্ছে রমজান। তাই মহিউদ্দিনের মতো বেশিরভাগ মানুষই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য ভিড় করছেন পাড়া-মহল্লার মুদির দোকানে। তাতে ভিড় বেড়েছে দোকানগুলোতে। এর মধ্যে নানা অজুহাতে বিভিন্ন দোকানে পণ্যের দাম বাড়িয়েও বিক্রি করতে দেখা গেছে।
একটু দূরেই সিপাহীবাগের নবীনবাগে সবুজ স্টোরে প্রতি কেজি চিনি ৮০ টাকা বিক্রি করতে দেখা যায়। যদিও সিপাহীবাগ বাজারে যেসব মুদি দোকান রয়েছে সেখানে প্রতি কেজি চিনির দাম ৭০ টাকা। একইভাবে ছোলা, খোলা সয়াবিন তেল, ডিমের দাম বেশি রাখা হয় এই দোকানে।
জানতে চাইলে দোকানি সবুজ মিয়া জানান, পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় তাকে কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। অল্প পুঁজির সীমিত মালে (পণ্য) কম দামে বিক্রি করার সুযোগ তার নেই। অল্প পণ্যের পরিবহন খরচ তুলনামূলক বেশি।
Advertisement
শুধু ওই দোকানেই নয়, রামপুরা তালতলা, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নানা অজুহাতে অলিগলির দোকানে রমজানে প্রয়োজনীয় পণ্যসহ অন্যান্য পণ্য বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা বাড়াতে এ অজুহাতের সুযোগটা বেড়েছে। ওইসব এলাকায় অলিগলিতে সবজি বাজার থেকে শুরু করে মুদি দোকানে উপচেপড়া ভিড়। যে যেভাবে পারছেন, খাবার মজুদের চেষ্টা করে চলেছেন। তাই চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, তেল, মসলার পাশাপাশি মাছ-মাংসের দোকানে ভিড়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে দামও।
বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক বিধিনিষেধের ঘোষণা করেছে সরকার। যদিও তাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী পেতে কোনো বাধা থাকবে না। বাজার খোলা থাকবে। এরপরও মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
নিত্যপণ্য কিনতে আসা মানুষজন বলছেন, লকডাউনের সময়সীমা বাড়লে চাল-ডাল, তেলসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এতে প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য একটু বেশি করে কিনে রাখছেন তারা। আবার কেউ বলছেন, রমজান উপলক্ষে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে রাখছেন তারা।
রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির পাশে শেখ সালাম নামের এক বিক্রতা বলেন, ‘দুদিন আগে প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে এসেও লকডাউনের খবরে আবার আজ পাইকারী বাজার থেকে পণ্য এনেছেন। পণ্য নেয়ার জন্য ভাড়া করেছেন পিকআপ। ওই পিকআপের ভাড়া আগে ছিল ২২০০ টাকা। আজ দিতে হয়েছে সাড়ে তিন হাজার টাকা।’
Advertisement
এদিকে পাড়া-মহল্লার ওইসব দোকানে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। দেখা গেছে, একে অপরের গা-ঘেঁষে চলছে কেনাকাটা। মুদি দোকানের পাশাপাশি সবজি, ফল ও মাছ-মাংসের দোকানেও ভিড় বেশি। অনেকের মুখে মাস্কও নেই। মাস্ক না পরার কারণ জিজ্ঞেস করলে একেকজন একেক অজুহাত দেখিয়েছেন।
এনএইচ/ইএ/এএসএম