রমজানের নতুন চাঁদের অনুসন্ধান প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অন্যতম সুন্নাত। এ সুন্নাত থেকে আজ মুসলিম উম্মাহ প্রায়ই উদাসীন। অথচ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসের ২৯ তারিখ সন্ধ্যায় নিজে রমজানের চাঁদের অনুসন্ধান করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে চাঁদ দেখতে বলতেন। রমজানের নতুন চাঁদ দেখলে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কল্যাণ ও বরকতের দোয়া করতেন। হাদিসের বর্ণনা থেকে তা প্রমাণিত।
Advertisement
তাই ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় (২৯ শাবান) রমজানের নতুন চাঁদ দেখার সঙ্গে সঙ্গেই মুমিন মুসলমান প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতের অনুসরণ ও অনুকরণে এ দোয়া পড়বেন। কল্যাণের প্রার্থনা করবেন এভাবে-হজরত তালহা ইবনে ওবায়দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন নতুন চাঁদ দেখতেন তখন বলতেন-اَللهُ اَكْبَرُ اَللَّهُمَّ أَهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالْأَمْنِ وَ الْاِيْمَانِ وَالسَّلَامَةِ وَ الْاِسْلَامِ وَ التَّوْفِيْقِ لِمَا تُحِبُّ وَ تَرْضَى رَبُّنَا وَ رَبُّكَ اللهউচ্চারণ : আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ঈমানি ওয়াস্সালামাতি ওয়াল ইসলামি ওয়াত্তাওফিকি লিমা তুহিব্বু ওয়া তারদা রাব্বুনা ওয়া রাব্বুকাল্লাহ।অর্থ : আল্লাহ মহান, হে আল্লাহ! এ নতুন চাঁদকে আমাদের নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সঙ্গে উদয় কর। আর তুমি যা ভালোবাস এবং যাতে তুমি সন্তুষ্ট হও, সেটাই আমাদের তাওফিক দাও। আল্লাহ তোমাদের এবং আমাদের প্রতিপালক।’ (তিরমিজি, মিশকাত)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রজব মাস থেকে রমজান পর্যন্ত হায়াত পেতে আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন। শাবান মাসজুড়ে বেশি বেশি রোজা রাখতেন এবং রমজানের জন্য ব্যকুল থাকতেন। তিনি শাবান মাসে চাঁদের হিসাব রাখতে দিন গণনা করতেন। আর রমজানের নতুন চাঁদ দেখার জন্য অপেক্ষা করতেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসের চাঁদের হিসাব যেভাবে রাখতেন অন্য কোনো মাসের হিসাব সেভাবে রাখতেন না। পরে চাঁদ দেখে রোজা রাখতেন।’ (মুসনাদে আহমদ)
Advertisement
১৩ এপ্রিল শাবান মাসের ২৯ তারিখ। সন্ধ্যায় চাঁদের অনুসন্ধান করে সুন্নাত আদায় করা মুমিন মুসলমানের জন্য একান্ত করণীয়। রমজানের চাঁদ দেখা গেলে সুন্নাতের অনুসরণে দোয়া পড়ে রমজানের আমেজ নিয়ে রাতের (তারাবিহ) নামাজ আদায়ের প্রস্তুতি গ্রহণ করা জরুরি। আর ভোর রাতে সাহরি খাওয়ার মাধ্যমে শুরু করবে রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজান।
মনে রাখা জরুরিরমজানের চাঁদ দেখলে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক খিুশি হতেন। তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতেন। রমজানের চাঁদকে অভিনন্দ জানাতেন। আল্লাহর প্রশংসা করতেন। নেক আমল করার তাওফিক কামনা করতেন।
এমনকি হাদিসের বর্ণনা মতে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের চাঁদকে সুপথ ও কল্যাণের বার্তাবহ বলে সম্বোধন করতেন এবং রমজানের কল্যাণ ও বরকত লাভের জন্য আল্লাহর কাছে তাওফিক করতেন।
শুধুমাত্র শাবান, রমজান বা শাওয়াল মাসের নতুন চাঁদ দেখেই এ দোয়া পড়তে হবে এমন নয় বরং অন্য মাসগুলোর নতুন চাঁদ দেখে এ দোয়া পড়াও প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লামের আমল।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রত্যেক হিজরি মাসের নতুন চাঁদ দেখার পর উল্লেখিত দোয়াটি পড়ার তাওফিক দান করুন। চাঁদ দেখে মাসব্যাপী কল্যাণের কাজ করার তাওফিক দান করুন। রমজানের চাঁদ দেখে মাসব্যাপী দিনের সিয়াম ও রাতের কিয়াম করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস