জাতীয়

বিধিনিষেধ ‘কাগজে কলমে’, রাস্তায় যানজট-মার্কেটে ভিড়

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণরোধে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের অষ্টম দিন সোমবার (১২ এপ্রিল)। কিন্তু রাজধানী ঢাকায় এ বিধিনিষেধের ছিটেফোঁটাও দেখা যাচ্ছে না। রাস্তাঘাটে গণপরিবহনসহ অবাধে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। দোকানপাটসহ মার্কেটগুলোতে দেখা গেছে উপচেপড়া ভিড়।

Advertisement

অন্যান্য দিনের চেয়ে সোমবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্যাডেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ঠেলাগাড়ি, ভ্যানগাড়ি, মাইক্রোবাস, মিনিবাস, বাস, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল অবাধে চলাচল করতে দেখা যায়। বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে প্রায়ই যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে যানজট সামলাতে ট্রাফিক পুলিশকে হিমশিম খেতে দেখা যায়।

স্যানিটাইজার ব্যবহার, মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালানোর কথা বলা হলেও অনেক বাস-মিনিবাসেই এসবে উদাসীনতা দেখা গেছে। যাত্রীরা মাস্ক পরলেও বাসে ওঠার ক্ষেত্রে দেখা যায়নি কোনো স্যানিটাইজার। যানবাহনের এতো চাপ ছিল যে, পুরান ঢাকার কোথাও কোথাও প্রচণ্ড রৌদ্রতাপে দীর্ঘক্ষণ যানজটে বসে থেকে মানুষকে ছটফট করতে দেখা যায়।

আগামী ১৪ এপ্রিল (বুধবার) থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধের (সর্বাত্মক লকডাউন) ঘোষণার দুদিন আগে রাজধানীর সর্বত্র মানুষের ঢল নামে। ফুটপাত থেকে ছোটবড় মার্কেট ও শপিংমলে মানুষকে কেনাকাটা করতে দেখা যায়। যেন ঈদের উৎসবের কেনাকাটা চলছিল।

Advertisement

ধানমন্ডি, লালবাগ, চকবাজার, ইসলামপুর ও সদরঘাট এলাকার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ছোটবড় মার্কেট ও শপিংমল ঘুরে দেখা যায়, হাজারো মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী, কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে পোশাক-আশাকও কিনছেন। গত কয়েক দিন ধরে দেশে রেকর্ডসংখ্যক মৃত্যু ও গড়ে সাত হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও তার কোনো ভাবলেশ ছিল না কেনাকাটায় আসা লোকজনের চোখেমুখে।

লকডাউনে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেয়া হলেও অনেককে বিলাসী পণ্য কেনাকাটা করতেও দেখা গেছে। এমনকি কিছু কিছু দোকানে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রেও উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেছে। অবশ্য গত কয়েক দিনে রাস্তাঘাটসহ সর্বত্র মুখে মাস্ক পরার প্রবণতা বাড়লেও কোথাও সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না।

অধিকাংশ মানুষের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, পরশু থেকে লকডাউন কড়াকড়ি হবে বুঝতে পেরে অনেকে রমজানের নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার-সদাই করছেন। কেউ কেউ মার্কেটে ঈদ শপিং করতে এসেছেন বলে স্বীকার করেন। সোমবার দিনভর তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় তৃষ্ণার্ত মানুষকে শরবত ও জুসের দোকানে ভিড় করতে দেখা যায়। অধিকাংশই স্বাস্থ্যবিধি ভুলে গিয়ে মাস্ক পরিধান ছাড়া পাশাপাশি দাঁড়িয়ে জুস পান করেন।

এমইউ/এআরএ/এইচএ/এএসএম

Advertisement