করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে দরজায় কড়া নাড়ছে আরও একটি রমজান মাস। গতবারই সংক্রমণ ঠেকাতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছিল রোজা-নামাজের স্বাভাবিক ব্যবস্থাগুলোতে। বিশ্বের অনেক দেশেই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল জামায়াতে নামাজ আদায়, মসজিদে ইফতারি আয়োজনের মতো জনবহুল কার্যক্রমগুলো। অনেক জায়গায় এবারও থাকছে সেই একই ধরনের কড়াকড়ি।
Advertisement
মসজিদে মুসল্লি ২০-৩০ শতাংশ এক বছরেও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি করোনা মহামারি। বরং গত কয়েক সপ্তাহে সংক্রমণ আরও আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। তাই এবার রমজান মাসে বিভিন্ন দেশে তারাবিসহ সব নামাজ বাড়িতে পড়ায় উৎসাহিত করা হচ্ছে। কয়েকটি মুসলিম দেশে মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বড়জোর ২০ থেকে ৩০ শতাংশ মুসল্লিকে নামাজ পড়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
ইফতার-সেহরি বাড়িতেমুসলিমপ্রধান সব দেশেই রমজান মাসজুড়ে মসজিদগুলোতে ইফতারির আয়োজন হয়। অনেক জায়গায় থাকে সেহরির ব্যবস্থাও। তবে করোনার মধ্যে এ নিয়মেও থাকছে কড়াকড়ি। বাংলাদেশের পাশাপাশি আরব ও আফ্রিকা অঞ্চলের মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোতে এবছর ইফতার ও সেহরি উপলক্ষে বাইরে সব ধরনের জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
গরিবের খাবার যাবে বাড়িতেগরিবদের যেন খাবারের অভাবে রোজা রাখতে সমস্যা না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখছে কয়েকটি দেশ। সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার ঘোষণা দিয়েছে, এবারের রমজানে তারা গরিবদের ঘরে ঘরে ইফতার পৌঁছে দেবে।
Advertisement
সান্ধ্য আইনকয়েকটি দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আগে জারি করা কারফিউ বা সান্ধ্য আইনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ওমানে রাত ৯টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত বাইরে বের হওয়ার নিষেধ। মরক্কোয় এই নিষেধাজ্ঞার সময় বাড়িয়ে রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা করা হয়েছে। ইরাকে কর্মদিবসে নিষেধাজ্ঞা থাকছে ৯টা থেকে ৫টা আর ছুটিতে সারাদিন। তুরস্কে সান্ধ্য আইন জারি থাকবে সপ্তাহান্তে।
ভিডিও কনফারেন্সে কুরআন তেলাওয়াতইরানে রমজান শুরুর আগে থেকেই কুরআন তেলাওয়াত এবং নামাজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে। মিসরের ধর্ম মন্ত্রণালয়ও নামাজ সরাসরি সম্প্রচারে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে।
টিকা নিলে রোজা ভাঙবে নাটিকা নিলে রোজা ভেঙে যাবে কি না এই প্রশ্ন রয়েছে অনেকের মনে। তবে ধর্মগুরু এবং ইসলামী চিন্তাবিদরা আশ্বস্ত করেছেন, করোনারোধী টিকা নিলে রোজা ভাঙবে না। বাংলাদেশের ইসলামিক ফাউন্ডেশন দেশের জ্যেষ্ঠ আলেমদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর জানিয়েছে, রোজা রেখে করোনাভাইরাসের টিকা নিতে কোনও সমস্যা নেই। গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আব্দুল করিম খাসাওনেহ’র ফতোয়া উল্লেখ করে জর্ডানের ইফতা ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটেও বলা হয়েছে, রোজা রেখে টিকা নেয়া যাবে। তবে টিকা নেয়ার পর জ্বর বা অন্য সমস্যার কারণে ওষুধ খেলে রোজা ভেঙে যাবে।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে
Advertisement
কেএএ/এএসএম