একুশে বইমেলা

করোনাকালে প্রকাশনা শিল্প বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি চাই

মো. রহমত উল্লাহ

Advertisement

অমর একুশে বইমেলা বাঙালির প্রাণের উৎসব। বাংলা সংস্কৃতি ও ভাষার চেতনায় উদ্ভাসিত এ মেলা। মরণঘাতি করোনাও আমাদের আটকে রাখতে পারেনি বইমেলা থেকে। প্রাণের বইমেলায় সংখ্যায় কম হলেও বইপ্রেমীরা ছুটে এসেছেন। ১৮ মার্চে শুরু হওয়া প্রাণের বইমেলা আজ (১২ এপ্রিল) শেষ হচ্ছে। তবে এবারের বইমেলার সমাপ্তি হয়েছে বেদনা বিধুর পরিবেশে।

ভালো-মন্দ মিলিয়ে প্রতিবারের বইমেলা শেষ হয়। কিন্তু এ বছরের মেলার কোনো সুখকর স্মৃতি আমাদের নেই। এ কথা ভাবতেই মনে বিষণ্নতা ভর করে। চক্রবৃদ্ধিহারে করোনার প্রকোপ বাড়ায় এবারের বইমেলায় পাঠকের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। তারমধ্যে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছিল বন্ধ। আবার জীবনের নিরাপত্তা বিবেচনায় অনেকেই আসতে পারেননি প্রাণের বইমেলায়। সবকিছু মিলিয়ে এবারের বইমেলায় প্রকাশনা শিল্প অভাবনীয় ক্ষতির মুখে পড়েছে।

এখন করোনার কষাঘাতে প্রকাশনা শিল্পের নিভু নিভু অবস্থা বলা চলে। এ কথায় বলতে পারি করোনা যেন প্রকাশনা শিল্পে 'মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা' অবস্থা।

Advertisement

প্রকাশনা শিল্পের অস্তিত্ব রক্ষায় সরকারের বিশেষ ও উদার সহযোগিতার প্রয়োজন। তা না হলে হারিয়ে যাবে ক্ষুদ্র-মাঝারি প্রকাশকরা। এবারের বইমেলায় ৯৫% প্রকাশনা স্টল নির্মাণের টাকাও বিক্রি করতে পারেননি। তাই সরকারের কাছে প্রকাশকরা ক্ষতিপূরণের আশায় বুক বেঁধেছেন। তা না হলে পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।

আমি বিশ্বাস সংস্কৃতি বান্ধব, বই বান্ধন ও প্রকাশনা বান্ধন বর্তমান সরকার এই করোনার সময়ে প্রকাশনা শিল্পকে বাঁচাতে উদ্যোগী হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা কন্যা শেখ হাসিনা আামাদের প্রকাশনা শিল্পকে বাঁচাতে অচিরেই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আমি আশা করছি।

এই করোনাকালে প্রকাশনা শিল্পকে অন্তত কিছুটা সহায়তা করে প্রাথমিকভাবে একটি পদক্ষেপ নিতে পারে সরকার। আর তা হচ্ছে জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সারাদেশে 'বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নারে' বই ক্রয়ের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ। আমি এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাই।

মেধাবী জাতি গঠনে সৃজনশীল বইয়ের বিকল্প নেই। তাছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস এবং জাতির পিতার নীতি আদর্শে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পাঠাভ্যাস গড়ে তোলা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আর এ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্য প্রকাশনা শিল্পকে বাঁচাতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

Advertisement

অন্যদিকে আমি খুদে পাঠক সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সৃজনশীল বই দেয়ার জোর দাবি জানাই। যেন আমাদের প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে উঠতে পারে। তবেই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সুফল আমাদের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে। আমি মনে করি এতেই গড়ে উঠবে সুশিক্ষিত একটি জাতি।

লেখক: পরিচালক (প্রকাশনা), বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি

এমএমএফ/এএসএম