ফিচার

করোনাকালে কুমড়ার বড়িতে আয় করছে শতাধিক পরিবার

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্বের অর্থনীতির চাকা গতিহীন হয়ে পড়েছে। নিম্ন আয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষের আয়-উপার্জন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সে সময়ে মাগুরার শালিখা উপজেলার ধনেশ্বরগাতী, তালখড়ি ও বুনাগাতি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি পরিবার বছরের বারো মাসই কুমড়ার বড়ি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে।

Advertisement

ডাল-চাল-কুমড়ার মিশ্রণ রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় কুমড়ার বড়ি। এ বড়ি তৈরি করে সংসার চালাচ্ছেন উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের শতাধিক পরিবার। পরিবারগুলো এটিকে পেশা হিসেবে নিয়েছে।

আগে শীতকালে পণ্যটির বেশি চাহিদা থাকতো। সে কারণে শুধু শীতকালেই কুমড়ার বড়ি তৈরি হতো। সারাদেশে চাহিদা ক্রমশ বেড়েছে। ফলে পরিবারগুলোর ওপর তাগিদ সৃষ্টি হয়েছে সারাবছর সরবরাহের।

বুনাগাতি গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে বাড়িতে কুমড়ার বড়ি তৈরি করে শুকানোর জন্য রোদে দেওয়া হয়েছে। নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও এ কাজ করছেন।

Advertisement

জানা যায়, কুমড়ার বড়ি তৈরির প্রধান উপকরণ মাসকলাইয়ের ডাল, চালকুমড়া এবং সামান্য মসলা। তবে অন্য ডাল দিয়েও বানানো হচ্ছে। স্থানীয় বাজারে প্রতিকেজি মাসকলাই ১০০ থেকে ১২০ টাকা আর চালকুমড়া ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি। সাইজ বিবেচনায় চালকুমড়া ৫০ থেকে ৭০ টাকায় কিনতে হয়। পাঁচ কেজি চালকুমড়ার সঙ্গে দুই কেজি মাসকলাইয়ের মিশ্রণে কুমড়ার বড়ি ভালো হয়।

কুমড়ার বড়ির কারিগর শুভশ্রী মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ বড়ি দিয়ে কৈ, শিং বা শোল মাছের ঝোল বেশ মুখরোচক ও জনপ্রিয়। বড়ি বানানোর উপযুক্ত সময় শীতকাল। তবে চাহিদা বাড়ায় এখন সারাবছরই তৈরি করছি। বাড়ির চাহিদা মিটিয়ে এ বড়ি হাত বদল হয়ে চলে যাচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে।’

বেলী কর্মকার বলেন, ‘দুই টাকা কেজি থেকে শুরু করে আজ ১২ টাকা কেজিতে বড়ি তৈরির কাজ করছি। বিশ বছরের অভিজ্ঞতা আমার। প্রতিদিন গড়ে একশ থেকে দুইশ টাকা আয় হয়ে থাকে। উপার্জনের এ অর্থ দিয়েই করোনার সময় আমাদের চাহিদাগুলো পূরণ করছি।’

জেলা বিসিক কর্মকর্তা আব্দুস সালাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘মাগুরার কুমড়ার বড়ি খেতে সুস্বাদু, নরম ও আকারে বড়। ইতোমধ্যে পণ্যটির বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। বর্তমানে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা, যশোরসহ বিভিন্ন স্থানে বড়িগুলো সরবরাহ করা হচ্ছে।’

Advertisement

মো. আরাফাত হোসেন/এসইউ/জিকেএস