ফরিদপুরের পদ্মা নদীর পাড় ঘেঁষা ধলার মোড় মদনখালী ও সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকার পদ্মার বুক থেকে রাতভর চলে বালু আহরোণ। রাত যত গভীর হয় ট্রাকের লাইন ততই লম্বা হতে থাকে। নদীর বুকে তখন চলে ৮ থেকে ১০টি ভেকু দিয়ে বালু উত্তোলনের মহোৎসব।
Advertisement
সরোজমিনে রাত ১০টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, ভেকুগুলো একের পর এক ট্রাকগুলো ভর্তি করছে বালু দিয়ে।
খালেক সেখ নামে একজন জানান, ভাই আমরা এখানে বাস করতে আর পারছি না। যে হারে ট্রাকগুলো রাতভর বালু নেয় এর শব্দ ও ধুলাবালিতে বাস করাই কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে। আমরা এর থেকে মুক্তি চাই।
জলিল মোল্লা নামে একজন জানান, এই এলাকার প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তি এসব কাজ করছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না। আমরা নিজেরাও খুব ভয় পাই। আপনারা কিছু একটা করেন ভাই।
Advertisement
বাবন নামে আরও একজন বলেন, একেকটি ভেকু রাতভর বালু তোলে। এর দায়িত্ব যিনি নিবেন তাকে ভোরে ভেকু প্রতি ২৫ হাজার টাকা দেয়ার কথা শুনেছি। সব খরচ বাদেই তিনি ওই টাকা পান বলে জানান।
এদিকে উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে রোববার (১১ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১০টার দিকে ওই দুই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের নির্দেশনায় ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুম রেজার সার্বিক তত্ত্বাবধানে অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল আমিন।
এ সময় তিনি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ঘটনাস্থল থেকে চালকসহ একটি ট্রাক আটক এবং ২টি ভেকু বিনষ্ট করেন। প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে দুষ্কৃতকারীরা এ সময় পালিয়ে যান।
Advertisement
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুম রেজা বলেন, আমরা স্থানীয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পদ্মা নদীর ভেতরে গিয়ে অভিযান পরিচালনা করি। এ সময় ড্রাইভারসহ একটি ট্রাক আটক এবং ২টি ভেকু বিনষ্ট করা হয়। এছাড়া আটকদের বিরুদ্ধে ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজুর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
স্থানীয়রা মনে করেন বালুখেকোদের এভাবে পরিকল্পনাহীনভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হওয়া উচিত। নইলে ভাঙনে দিশেহারা হতে হবে পদ্মার তীরবর্তী বাসিন্দাদের।
এফএ/জিকেএস