স্বাস্থ্য

মেডিকেলে বিদেশি কোটায় দেশি ছাত্র : কনসালটেন্সি কোম্পানিগুলো নাখোশ

দেশের বিভিন্ন প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে বিদেশিদের জন্য সংরক্ষিত শতকরা ৫০ ভাগ কোটায় দেশীয় শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে জনপ্রতি অতিরিক্ত কয়েক লাখ টাকা বেশি হাতিয়ে কমপক্ষে ১০টি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ বিদেশি কোটায় দেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করছে। বিদেশি কোটায় ভর্তির ক্ষেত্রে জনপ্রতি ৩০ লাখ থেকে ৩২ লাখ টাকা আদায় করছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।অনুসন্ধানে জানা যায়, অতিরিক্ত টাকা খরচ করে হলেও মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়ে দেশীয় শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা খুশি। তবে এতে বিদেশি কনসালটেন্সি কোম্পানিগুলো দারুন নাখোস। তাদের অভিযোগ রাজধানীর বেশ কিছু মেডিকেল কলেজ ওয়াদা ভঙ্গ করে বিদেশিদের কোটায় দেশীয় শিক্ষার্থী ভর্তি করেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএমসিএ) একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, প্রতি বছর বিভিন্ন প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ বিভিন্ন বিদেশি কনসালটেন্সি কোম্পানির (বিশেষত প্রতিবেশী দেশ ভারত ও নেপাল) সঙ্গে শিক্ষার্থী প্রতি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা কমিশন প্রদানের মৌখিক চুক্তির মাধ্যমে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করে থাকে। ভারত ও নেপালে কমপক্ষে ২০টি কনসালটেন্সি কোম্পানি কাজ করছে।এ বছরও তারা বিভিন্ন কনসালটেন্সি কোম্পানিকে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারলে কমিশন দেয়ার আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত নাকচ করে দেয়। ইতোমধ্যেই কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর জন্য তারা নিজ দেশে প্রচার প্রচারণায় টাকা খরচ করে ফেলায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।নেপথ্যে কারণ খুঁজে জানা গেছে, চলতি বছর মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় ৪৮ হাজার শিক্ষার্থী পাশ করায় গত বছরের মতো এবার কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী সংকট নেই। গত বছর শিক্ষার্থী না পাওয়ায় বিভিন্ন প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ ২২/২৩ লাখ টাকায় বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করেছিল।শুধু তাই নয়, বিভিন্ন কনসালটেন্সি কোম্পানিকে ওই টাকা থেকে জনপ্রতি দেড় থেকে দুই লাখ টাকা কমিশনও দিয়েছিলেন। কিন্তু এবার দেশীয় শিক্ষার্থীর ব্যাপক চাহিদা থাকায় বিদেশি কোটায় দেশীয় শিক্ষার্থী ভর্তিতে মনোযোগী হয়েছে।  বিপিএমসিএ’র কোনো কোনো কর্মকর্তা বলছেন, বিদেশি কনসালটেন্সি কোম্পানিগুলো নাখোশ হলেও দেশীয় শিক্ষার্থীদের সুযোগ করে দেয়া অন্যায় কিছু হয়নি। আবার কেউ কেউ বলছেন, ওয়াদা বরখেলাপের এ খারাপ নজির স্থাপনের ফলে কনসালটেন্সি ফার্মগুলো ভবিষ্যতে বাংলাদেশে শিক্ষার্থী পাঠাতে উৎসাহী নাও হতে পারে।সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিপিএমসিএ’র মহাসচিব শাহ মো. সেলিম জাগো নিউজকে জানান, বিদেশিদের জন্য সংরক্ষিত কোটায় দেশীয় শিক্ষার্থী ভর্তিতে বাধা নেই। তিনি জানান, বিদেশি শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে ভর্তির আবেদন করছে। ৩০ নভেম্বর আবেদনপত্র জমা দেয়ার শেষ সময়। তারা ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানিয়েছেন। ৩১ ডিসেম্বর বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির শেষ সময়।অতিরিক্ত টাকা নিয়ে বিদেশি কোটায় দেশীয় শিক্ষার্থী ভর্তি করার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে শাহ মো. সেলিম বলেন, এ ধরনের লিখিত কোনো ধরনের অভিযোগ তারা পাননি বলে মন্তব্য করেন তিনি। এমইউ/একে/পিআর

Advertisement