১৪ এপ্রিল (বুধবার) থেকে নতুন করে কঠোর লকডাউনে যাচ্ছে সরকার। এটা হবে প্রথম পর্যায়ের সংক্রমণের সময় দেয়া সাধারণ ছুটির আদলে। লকডাউন ঘোষণার প্রজ্ঞাপন সোমবার (১২ এপ্রিল) জারি করা হতে পারে।
Advertisement
রোববার (১১ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘১৪ এপ্রিল সকাল ছয়টা থেকে সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। সাধারণ ছুটি বা ওই রকম কিছু আমরা বলছি না। গণপরিবহন ও ব্যাংক বন্ধ থাকবে। তবে গার্মেন্টসসহ শিল্প-কারখানা খোলা থাকবে। জরুরি সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা থাকবে। আপাতত যেসব আলোচনা হয়েছে তার ভিত্তিতেই আমরা এটা বলতে পারি।’
প্রাথমিকভাবে সাতদিনের জন্য এই লকডাউন দেয়া হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে এর মেয়াদ বাড়ানো হবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
Advertisement
এর আগে এ বিষয়ে ভার্চুয়াল সভা হয়। সভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা যুক্ত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগ) শেখ রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘১৪ তারিখ থেকে লকডাউন থাকছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রজ্ঞাপনে থাকবে। সোমবার নাগাদ প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।’
করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় গত ৫ এপ্রিল ভোর ছয়টা থেকে সাতদিনের লকডাউন বা বিধি-নিষেধ জারি করে সরকার। এই বিধি-নিষেধের মেয়াদ শেষ হবে রোববার রাত ১২টায়।
বিধি-নিষেধের সময়ে পালনের জন্য গত ৪ এপ্রিল জারি করা প্রজ্ঞাপনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ১১টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
Advertisement
বিধি-নিষেধ শুরু হলে গণপরিবহন না পেয়ে দুর্ভোগে পড়েন খোলা থাকা সরকারি-বেসরকারি অফিসের কর্মীরা। গণপরিবহন না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেন যাত্রীরা। একই সঙ্গে দোকান ও মার্কেট খুলে দিতেও আন্দোলনে নামেন মালিক-শ্রমিকরা।
এরই মধ্যে গত ৭ এপ্রিল সিটি করপোরেশন এলাকার মধ্যে গণপরিবহন খুলে দেয়া হয়। সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চলাচল করছে বাস। তবে শপিংমল ও দোকান মালিক-শ্রমিকদের আন্দোলন চলছিল।
শেষে ৯ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে বলে বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
এর মধ্যে শুক্রবার (৯ এপ্রিল) সকালে সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশে করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। কিন্তু এতেও কমেনি জনগণের উদাসীনতা। এ অবস্থায় জনস্বার্থে সরকার আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সক্রিয় চিন্তা-ভাবনা করছে।
পরে ওইদিন দুপুরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এবার কঠোর লকডাউনে যাচ্ছে সরকার। আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে সাতদিনের জন্য এই লকডাউন দেয়া হবে।
আজ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক অফিস আদেশে বলা হয়, চলমান বিধি-নিষেধ আগামী ১৪ এপ্রিল ভোর ছয়টা পর্যন্ত বহাল থাকবে।
আরএমএম/এমআরআর/এমকেএইচ