রাজনীতি

করোনা আক্রান্ত খালেদা প্রয়োজন হলে কোন হাসপাতালে যাবেন?

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। যদিও তার পরিবার ও দলের তরফ থেকে এখনো এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। তবে খালেদার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ায় পর এখন আলোচনা চলছে, যদি প্রয়োজন পড়ে, তাহলে কোন হাসপাতালে ভর্তি হবেন বা চিকিৎসা নেবেন খালেদা জিয়া?

Advertisement

এর আগে রোববার (১১ এপ্রিল) স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান সাংবাদিকদের জানান, খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত। পরে বিএনপি প্রধানের করোনা পজিটিভ রিপোর্টটি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে।

তারপর থেকে রাজনীতি-সচেতন সবার আলোচনার কেন্দ্রে খালেদার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি। তারা ৭৪ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান শারীরিক অবস্থা কেমন, তার চিকিৎসা কি বাসায়ই চলবে নাকি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হবে তা জানতে চাইছেন।

যদি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয় তবে তিনি কোন হাসপাতালে যাবেন, তার ইচ্ছেমাফিক যে কোনো হাসপাতালে যেতে পারবেন, নাকি আবার তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হবে, তা-ও জানতে আগ্রহী তারা।

Advertisement

বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) পাশাপাশি সাধারণ শয্যারও চরম সংকট চলছে। মন্ত্রী, এমপি, সচিব, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ও চিকিৎসক নেতাদের তদবির ও সুপারিশেও হাসপাতালে শয্যা মিলছে না। এক্ষেত্রে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হলে তিনি কোথায় যাবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদেরও।

দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রায় দুই বছর কারাভোগের পর গত বছরের ২৫ মার্চ শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান। দেশে করোনাভাইরাস ছড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে মানবিক বিবেচনায় শর্তসাপেক্ষে খালেদার সাজা স্থগিত করে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। শর্ত হলো- খালেদা ঢাকার নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন এবং এই সময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।

পরে আরও দু’দফায় খালেদার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। মুক্তির পর থেকে রাজধানীর গুলশানের ভাড়াবাসা ‘ফিরোজায়’ বসবাস করছেন খালেদা জিয়া। সেখানে খালেদার সার্বক্ষণিক সঙ্গী গৃহকর্মী ফাতেমা ও একজন নার্স। প্রায়ই বিকেলে সেখানে যান বোন সেলিমা ইসলাম। নিয়ম করে চেকআপ করতে যান চিকিৎসকরাও। প্রয়োজনের তাগিদে আইনজীবীরাও মাঝে মধ্যে যান খালেদার বাড়িতে।

তার করোনায় আক্রান্ত হওয়া এবং সম্ভাব্য চিকিৎসার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসএমএমইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য় অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে জানান, তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার তথ্যটি শুনেছেন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর যদি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে তারা তাকে করোনার সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে প্রস্তুত রয়েছেন। ইতিপূর্বেও (কারাদণ্ড ভোগকালে) তিনি এ হাসপাতালের কেবিনে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

Advertisement

অবশ্য গত মার্চে খালেদার মুক্তির মেয়াদ তৃতীয় দফায় বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারির পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, দণ্ড স্থগিতের মাধ্যমে মুক্তি পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বাসায় থেকে দেশের যে কোনো হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারবেন

তিনি যে হাসপাতালে চান সেই হাসপাতালে যেতে পারবেন কি-না, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হাসপাতালে যদি প্রয়োজন হয়, ওই রকম প্রয়োজন না হলে যাবেন কেন? যদি প্রয়োজন হয় এমন কোনো ইর্মাজেন্সি আসে যে হাসপাতালে নিতে হবে, সেখানে আমাদের কোনো বাধা নেই। তবে হাসপাতাল দেশের মধ্যে হতে হবে।

এমইউ/এইচএ/জেআইএম