জাতীয়

ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা : জড়িতদের শাস্তি দাবি মহিলা পরিষদের

সিলেটের জকিগঞ্জে দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টায় জড়িতদের শাস্তি এবং স্কুলছাত্রীর পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।

Advertisement

শনিবার (১০ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, জকিগঞ্জ উপজেলার একটি গ্রামে দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। গত ৫ এপ্রিল রাতে ওই শিক্ষার্থী প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে যান। সেসময় প্রতিবেশী আফতার হোসেনের ছেলে সালমান আহমদ তাকে জোর করে ধরে নিয়ে যর এবং সারারাত ধর্ষণ করে পরদিন ভোরে তাকে অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে ফেরত দিয়ে যায়।’

‘এ ঘটনার পর স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীসহ আফতার হোসেনের ছেলে সালমান আহমদসহ ঘটনা ধামাচাপায় জড়িত উপজেলার সেনাপতিরচক গ্রামের মৃত ফজই মিয়ার ছেলে হেলাল আহমদ, স্থানীয় ইউপি সদস্য সামসুল হক, রারাই গ্রামের মৃত আব্দুল জলিল টরইর ছেলে হাফিজ খালেদ, একই গ্রামের ফরল মিয়া, আমলশীদ গ্রামের আব্দুস সালাম ঘটনার শিকার পরিবারকে ঘটনা আপোষে নিষ্পত্তি করতে চাপ সৃষ্টি করে মারধরসহ হয়রানি করে।’

Advertisement

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা লক্ষ্য করছি যে, সারাদেশে বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত কিশোরী, তরুণী ও নারীরা যৌন নিপীড়ন, ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, আত্মহত্যা ও হত্যাসহ নৃশংস নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এছাড়াও সারাদেশে ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি ঘরের ভেতরেও শিক্ষার্থী, কিশোরী ও নারীরা বখাটেদের হামলার শিকার হচ্ছেন, যা দেশের সার্বিক অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করার পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।’

‘নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে সমাজে সহিংসতা আরও বেড়ে যাচ্ছে। এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।’

মহিলা পরিষদ জানায়, অব্যাহত নারী ও শিশুদের ওপর নৃশংস নির্যাতনের ঘটনায় বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলতে থাকায় দুর্বৃত্তদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে এবং তারা ধরা ছোঁয়ার বইরে থেকে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্য নারীর প্রতি বর্বর ও নৃশংস সহিংসতা এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি গ্রহণ সাপেক্ষে আশু কার্যকর বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার ও প্রশাসনের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নির্যাতনের শিকার দশম শ্রেণির ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির লক্ষ্যে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ স্কুলছাত্রীসহ তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জোর দাবি জানায়। সেই সঙ্গে নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা প্রতিরোধে সকল সামাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানায়।

Advertisement

এফএইচ/ইএ/এমএস