দারিদ্র্য জয় করে মেধার জোরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন রিকশাচালকের ছেলে আব্দুর রহিম। তার এ অর্জনে পরিবারের পাশাপাশি গ্রামবাসীর মধ্যেও বইছে আনন্দের বন্যা। তবে মেডিকেলে ভর্তি ও পড়ার খরচ নিয়ে পরিবারের মাঝে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।
Advertisement
আব্দুর রহিম যশোরের মণিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি গ্রামের আব্দুল হালিম বিশ্বাসের ছেলে। তারা দুই ভাই এক বোন। পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি তার বাবা। গত ১০ বছর ধরে তিনি ঢাকা শহরে রিকশা চালিয়ে সংসারের খরচ বহন করেছেন। পাশাপাশি সন্তানদের পড়ার খরচও চালিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে রিকশা চালানো বন্ধ করে তিনি এখন বাড়িতে অবস্থান করছেন। তাই ছেলের মেডিকেলে ভর্তি ও পড়ার খরচ নিয়ে পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।
আব্দুর রহিম স্থানীয় গৌরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ করে ভর্তি হন একই এলাকার নেংগুড়াহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজে। সেখান থেকে ২০১৮ সালে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। বাবা হালিম বিশ্বাস রিকশা চালাতেন ঢাকাতে। তিনি রহিমকে ঢাকার বিজিবির সদর দফতরে অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজে ভর্তি করেন। উচ্চমাধ্যমিকেও জিপিএ-৫ পান তিনি। এবারের এমবিবিএস প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ৭২৪তম স্থান অধিকার করেছেন।
মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়ে খুশি আব্দুর রহিম। যদিও ভর্তিসহ পড়াশোনা চালানোর ব্যয় কীভাবে চালাবেন তা তিনি জানে না। তাই দুশ্চিন্তাও আছে মনে।
Advertisement
আব্দুর রহিমের মা জেসমিন খাতুন বলেন, ‘২ শতাংশের ভিটেবাড়ি ও মাঠে দুই কাঠা জমি ছাড়া কিছুই নেই। শুনেছি ডাক্তারি পড়তে অনেক টাকা-পয়সা খরচ হয়। ছেলের লেখা-পড়ার খরচ নিয়ে শঙ্কায় আছি।’
বাবা আব্দুল হালিম বিশ্বাস বলেন, ‘রিকশা চালিয়ে পাঁচজনের সংসার চালানোর পাশাপাশি দুই ছেলে মেয়ের লেখাপড়া করাচ্ছি। ইচ্ছে ছিল ঢাকায় রিকশা চালিয়েই ছেলের মেডিকেলে ভর্তি ও পড়াশোনার খরচের ব্যবস্থা করব। কিন্তু করোনার কারণে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে আসতে হয়েছে। এখন এখানেই পরের জমিতে কামলা খাটছি। তাই ছেলের ভর্তি বা অন্যান্য খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। কেউ সাহায্যের হাত বাড়ালে আমার ছেলে ভালো একজন চিকিৎসক হত পারতো।
মিলন রহমান/এসজে/এমকেএইচ
Advertisement