দেশজুড়ে

পুলিশি অভিযানে পুরুষশূন্য সালথা

ফরিদপুরের সালথায় সহিংসতার পর জোরদার পুলিশি অভিযানে উপজেলাসহ আশেপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের গ্রামগুলো পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।

Advertisement

শুক্রবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে এসব এলাকার বাড়িঘরগুলোতে নারী আর শিশু ছাড়া কোনো সদস্যদের দেখা মেলেনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, এলাকায় অবস্থিত বাড়ির নারী ও শিশুদের চোখে-মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বাইরের মানুষ দেখলেই তারা ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন।

ফুকরা বাজার এলাকার করিমন বেগম বলেন, সবসময় ভয়ে রয়েছি। পুলিশ দেখতে দেখতে সারাদিন কেটে যাচ্ছে। সবাই পালিয়ে গেছে।

Advertisement

নূরজাহান নামের এক নারী বলেন, ওইদিন অন্য এলাকা থেকে লোকজন এসে হামলা করছে। আমাদের গ্রামের কোনো লোক সেখানে ছিল না।

গট্টি এলাকার মনির জানান, বালিয়া গট্টি এলাকা ও উপজেলার বাড়িগুলোতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই। ঘটনার পর থেকে এসব এলাকার লোকজন পলাতক অবস্থায় রয়েছে।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, আসামিদের ধরতে জোর অভিযান চালানো হচ্ছে। এ অভিযানের কারণে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে এলাকাগুলো। তিনি আরও বলেন, জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এরইমধ্যে ৩৬ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এই ঘটনায় গুলিবৃদ্ধ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে ঘটনার পর থেকে এপর্যন্ত মামলা হয়েছে পাঁচটি। মামলায় ২৬১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৬ হাজার ৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

Advertisement

উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে লকডাউনের প্রথম দিনে সরকারি নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে জনতার সঙ্গে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও তার সহকারীদের ভুল বোঝাবুঝি হয়। তর্কে-বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন স্থানীয়রা। এক পর্যায়ে গুজব রটিয়ে উপজেলা পরিষদ, থানা ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনসহ বিভিন্ন অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

পরে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় ৫৮৮ রাউন্ড শটগানের গুলি, ৩২ রাউন্ড গ্যাস গান, ২২টি সাউন্ড গ্রেনেড এবং ৭৫ রাউন্ড রাইফেলের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। এতে রামকান্তপুর এলাকার জুবায়ের হোসেন (১৮) নামের এক যুবক নিহত হন। আহত হন প্রায় শতাধিক।

এসময় গুলিবিদ্ধ হন আরও তিন-চারজন। তাদেরকে ঢাকা ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এসএমএম/এএসএম