জরায়ুর সমস্যা নিয়ে গত বছরের ১০ নভেম্বর ঝালকাঠির রাজাপুরের সোহাগ ক্লিনিকে ভর্তি হন উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের ইদ্রিস মোল্লার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪০)। রোগীর এইচবিএসএজি পজিটিভ থাকার পরেও ১১ নভেম্বর ক্লিনিকের চিকিৎসক নাসরিন সুলতানা তার জরায়ুতে অপারেশন করেন। অপারেশনের পাঁচ দিন পরে তাকে ক্লিনিক থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। কিন্তু দিন দিন তার অসুস্থতা বাড়তে থাকে। পরে বরিশাল শেরে বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহ আলম তালুকদারকে দেখালে অপারেশনে ত্রুটির বিষয়টি ধরা পড়ে।
Advertisement
এরপর সোহাগ ক্লিনিকের মালিক আহসাান হাবিব সোহাগের কাছে বিষয়টি জানালে তিনি নিজ খরচে উন্নত চিকিৎসা করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে কালক্ষেপন করতে থাকেন। এভাবে তিন মাস চলে যাওয়ার পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ক্লিনিক মালিকের কাছে গিয়ে আবার চিকিৎসা সহায়তার জন্য বলেন ফরিদার স্বামী ইদ্রিছ মোল্লা।
তখন সোহাগ ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফিস্টুলা সেন্টার/বিবিএফ গিয়ে তাকে ফোন করতে বলেন। চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের কথা বললে অপারগতা প্রকাশ করেন সোহাগ।
এদিকে, জরায়ুর অপারেশন করাতে গিয়ে চিকিৎসকের ভুলে এখন মৃত্যু পথযাত্রী ফরিদা বেগম। নিরুপায় হয়ে ফরিদা বেগমের স্বামী ঝালকাঠি সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
Advertisement
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ‘রাজাপুর সোহাগ ক্লিনিকে ফরিদা বেগমের জরায়ু টিউমার অপারেশন করানো হলে চিকিৎসক নাসরিন সুলতানা ভুল চিকিৎসা করেন। তিন মাস অতিবাহিত হলে পুনরায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে উন্নত চিকিৎসা করানোর দায়ভার নেন সোহাগ ক্লিনিকের মালিক আহসান হাবিব সোহাগ। তিন মাস পরে জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আহসান হাবিব সোহাগের সঙ্গে আলোচনায় বসা হয়। তখন তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফিস্টুলা সেন্টার/বিবিএফ গিয়ে ফোন করতে বলেন। ওই চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের কথা উল্লেখ করলে চিকিৎসার টাকা দিতে অপারগতা স্বীকার করে পারলে থানায় গিয়ে মামলা করতে বলেন তিনি।’
ইদ্রিস মোল্লা বলেন, ‘আমি অশিক্ষিত মানুষ। ডাক্তার যেভাবে ভালো বুঝেছেন সেভাবেই অপারেশন করেছেন। আমার স্ত্রীর এইচবিএসএজি পজিটিভ থাকার পরেও তিনি অপারেশন করেছেন। এ কারণে তার অপারেশন স্থলে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। পরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শাহ আলম তালুকদারকে দেখালে চিকিৎসায় ভুল ধরা পড়ে। তখন ডাক্তারের অদক্ষতার বিষয়টি বুঝতে পারি। বর্তমানে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চিকিৎসাধীন আমার স্ত্রী। এখন যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
তবে ক্লিনিক মালিক আহসান হাবিব সোহাগ দাবি করেন, ‘অপারশেন সফলভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। তিন মাস পরে অপারেশন স্থলে সমস্যা কথা নিয়ে এলে তাদের উন্নত চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দয়ো হয়েছে। এখন তারা আমার ওপর সম্পূর্ণ দায়ভার চাপাতে চেষ্টা করছেন।’
এসএস/এমএস
Advertisement